ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

মুনাফায় ১২ বস্ত্র কোম্পানি: তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৯ ২৩:১৬:৩৫
মুনাফায় ১২ বস্ত্র কোম্পানি: তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতে খানিকটা স্বস্তি ফেরাতে শুরু করেছে কিছু কোম্পানি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই সময়ে মুনাফা বেড়েছে অন্তত ১২টি কোম্পানির। ৫৮টি তালিকাভুক্ত বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৩টি কোম্পানি তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্য থেকেই উঠে এসেছে এই চিত্র।

লাভে থাকা ১২ কোম্পানি

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, শাশা ডেনিমস, সোনারগাঁও টেক্সটাইলস, দেশ গার্মেন্টস, দুলামিয়া কটন, তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, স্টাইলক্রাফট, আর্গন ডেনিমস, এনভয় টেক্সটাইলস, মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং ও মতিন স্পিনিং—এই ১২ কোম্পানির মুনাফা বাড়ার খবর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্স

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ

তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৭৬ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ছিল ৭২ পয়সা। নয় মাসে কোম্পানিটি আয় করেছে ২ টাকা ২৬ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ৫৬ পয়সা বেশি।

শাশা ডেনিমস

তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে হয়েছে ১০ পয়সা, যা গত বছর ছিল মাত্র ৩ পয়সা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের সময়ের তুলনায় ৩৮ পয়সা বেশি।

সোনারগাঁও টেক্সটাইলস

প্রান্তিক ইপিএস ২২ পয়সা। গত বছর এই সময় ছিল ২০ পয়সা। তিন প্রান্তিকে লোকসান কাটিয়ে কোম্পানি এখন ২ পয়সা আয় করেছে, যেখানে গত বছর ছিল ৫ পয়সার ক্ষতি।

দেশ গার্মেন্টস

তৃতীয় প্রান্তিকে আয় বেড়ে হয়েছে ৩৯ পয়সা (আগে ৩৬ পয়সা)। যদিও নয় মাসে ইপিএস অপরিবর্তিত থেকেছে ৪৮ পয়সায়।

দুলামিয়া কটন

ব্যতিক্রমী অগ্রগতি—গত বছর ১৬ পয়সা লোকসানের জায়গায় এবার ২ পয়সা লাভ। নয় মাসে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২৪ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ৩০ পয়সার লোকসান।

তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ

লাভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ পয়সায় (আগে ছিল ৮ পয়সা)। যদিও নয় মাসের হিসাবে কিছুটা কমেছে—৪৭ পয়সা থেকে ৫৪ পয়সা।

কুইন সাউথ টেক্সটাইল

লাভ বেড়ে হয়েছে ১৮ পয়সা। নয় মাসে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৬ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ পয়সা বেশি।

স্টাইলক্রাফট

এক বছরে দারুণ ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। লোকসান ২৪ পয়সা থেকে মুনাফায় এসে দাঁড়িয়েছে ৩ পয়সা। নয় মাসে ২.৮২ টাকা লোকসানের বদলে এবার আয় ১০ পয়সা।

আর্গন ডেনিমস

লাভ বেড়ে হয়েছে ৪০ পয়সা (আগে ১৪ পয়সা)। নয় মাসে কোম্পানিটি আয় করেছে ১ টাকা ৪২ পয়সা, যা আগের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি।

এনভয় টেক্সটাইলস

সর্বোচ্চ ইপিএস প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে এই কোম্পানিতে। প্রান্তিক আয় ২.৪৪ টাকা (আগে ১.১৮ টাকা), নয় মাসে ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৩ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

মতিন স্পিনিং

তৃতীয় প্রান্তিকে ইপিএস ১.০৫ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ পয়সা বেশি। নয় মাসে আয় ৩.৬৬ টাকা, যা এক বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং

প্রান্তিক ইপিএস বেড়ে হয়েছে ২৯ পয়সা (আগে ২২ পয়সা)। নয় মাসে কোম্পানিটি আয় করেছে ৭০ পয়সা, যদিও বড় কোনো পরিবর্তন নেই (আগে ৬৯ পয়সা)। তবে ক্যাশ ফ্লো কমে ২.৭১ টাকা থেকে দাঁড়িয়েছে ৪.৪১ টাকায়, এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৩৯ পয়সায়।

যদিও পুরো বস্ত্র খাতে মুনাফা ফেরার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না, তবুও অন্তত ১২টি কোম্পানির এই ঘুরে দাঁড়ানো কিছুটা হলেও বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করে তুলবে। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তবে আগামী প্রান্তিকগুলোতে বস্ত্র খাত ঘুরে দাঁড়ানোর আরও বড় সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ