ঢাকা, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

আরও ৫ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৮ ১৮:১৫:৫৫
আরও ৫ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শেয়ারবাজারে গতিশীলতা: প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ইন্ট্রাকো, শাশা ডেনিমস, একমি ল্যাবরেটরিজ ও এমজেএল বিডির তৃতীয় প্রান্তিকের চমক

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চার প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, শাশা ডেনিমস, একমি ল্যাবরেটরিজ এবং এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসির প্রকাশিত আয় ও সম্পদমূল্যের চিত্রে দেখা যাচ্ছে, কেউ কেউ উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছে, কেউবা স্থিতিশীল থেকেছে।

চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোম্পানিগুলোর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স:

ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন: লাভের গতি বেড়েছে

ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি আয় (কনসোলিডেটেড ইপিএস) বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। জানুয়ারি-মার্চ’২৫ প্রান্তিকে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৫ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ২০ পয়সা।

পুরো ৯ মাস শেষে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়ে হয়েছে ১ টাকা ৮ পয়সা, যা আগের বছরের ৮৩ পয়সার তুলনায় উল্লেখযোগ্য। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ২৩ পয়সায়।

শাশা ডেনিমস: ধীরগতির ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত

শাশা ডেনিমস লিমিটেডের আয় ধীরে ধীরে বেড়েছে। তৃতীয় প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ১০ পয়সা, যেখানে গত বছর ছিল মাত্র ৩ পয়সা।

৯ মাস শেষে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা, আগের বছরের তুলনায় (৯২ পয়সা) তা উল্লেখযোগ্য উন্নতি। এই সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪১ টাকা ৫৬ পয়সায়, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করে।

একমি ল্যাবরেটরিজ: স্থিতিশীলতার ছাপ

একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড তাদের আগের বছরের অর্জন ধরে রেখেছে। জানুয়ারি-মার্চ’২৫ প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৮১ পয়সা, যা আগের বছরের ২ টাকা ৭৫ পয়সার তুলনায় সামান্য উন্নতি।

পুরো ৯ মাস শেষে ইপিএস হয়েছে ৮ টাকা ২৮ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ৮ টাকা ৫৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১২৩ টাকা ১১ পয়সা—যা এখনো বাজারে এক শক্তিশালী ভিত্তির প্রতীক।

এমজেএল বিডি: ইপিএসে সামান্য চাপ, তবে বার্ষিক অগ্রগতি

এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসির তৃতীয় প্রান্তিকে ইপিএস কিছুটা কমে হয়েছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা (আগের বছর ছিল ১ টাকা ৫৪ পয়সা)। তবে পুরো ৯ মাস শেষে কোম্পানিটি ভালো অগ্রগতি দেখিয়েছে—ইপিএস বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ৯ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ৬ টাকা ৫৫ পয়সা।শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্যও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা ৬৫ পয়সায়।

প্রিমিয়ার সিমেন্টের আয়ে বড় ধাক্কা, তৃতীয় প্রান্তিকের চিত্র উদ্বেগজনক

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার সিমেন্ট লিমিটেড ৩১ মার্চ, ২০২৫ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের সতর্ক সংকেতও বয়ে এনেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে প্রিমিয়ার সিমেন্টের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩১ পয়সা। অথচ আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আয় কমেছে প্রায় ৮৮ শতাংশ, যা কোম্পানিটির আর্থিক চাপের স্পষ্ট প্রতিফলন।

তিন প্রান্তিক মিলিয়ে (জুলাই’২৪-মার্চ’২৫) কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৭ পয়সা, যেখানে গত বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৫ টাকা ১৯ পয়সা। ৯ মাসে প্রায় ৮৭ শতাংশ আয় কমে যাওয়া কোম্পানিটির ব্যবসায়িক পরিবেশের চ্যালেঞ্জকেই সামনে নিয়ে আসছে।

এদিকে, আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকা ৮৯ পয়সা। নিট সম্পদ মূল্য অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল থাকলেও আয় কমার প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের মাঝে উদ্বেগ বাড়াতে পারে।

এই ৫ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট, কোনো কোম্পানি বাজারে ভালো অগ্রগতি ধরে রেখেছে, আবার কেউ কেউ ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। সামনের প্রান্তিকগুলোতে বিনিয়োগকারীরা আরও শক্তিশালী পারফরম্যান্সের প্রত্যাশায় থাকতে পারেন।

রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ