
Alamin Islam
Senior Reporter
বাংলাদেশ কি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনা: সীমাবদ্ধতা, বাধ্যবাধকতা ও বিকল্প পন্থা
বর্তমান বিশ্বে সামরিক শক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পরমাণু অস্ত্র। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়াতে পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে, ভারত ও পাকিস্তান পরমাণু শক্তির অধিকারী দেশ। এ অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সীমান্ত সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশও নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তবে, বাংলাদেশের জন্য প্রশ্ন হচ্ছে—বাংলাদেশ কি কখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হবে?
বাংলাদেশের সামরিক শক্তি ও সীমাবদ্ধতা
বাংলাদেশ বর্তমানে একটি প্রতিরক্ষামূলক নীতি অনুসরণ করছে, যা দেশের নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বাংলাদেশ, কিন্তু পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের সামরিক শক্তি এখনো সীমিত।
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিগত বাধা
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য উন্নত প্রযুক্তিগত অবকাঠামো প্রয়োজন, বিশেষ করে উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়াম উৎপাদন এবং পরমাণু চুল্লি এবং পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের জন্য বিশেষ প্রযুক্তি প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরমাণু শক্তি ব্যবহার করছে, তবে এটি অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে নয়।
আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও চুক্তি
বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ লাভের পর ১৯৭৯ সালে পারমাণবিক বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির অধীনে বাংলাদেশ পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চুক্তি ভঙ্গ করলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন হতে পারে। বর্তমানে ১৯১টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, তবে ভারত, পাকিস্তান এবং ইসরাইলসহ কয়েকটি দেশ চুক্তি থেকে বের হয়ে গেছে।
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই ধরনের বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এ ছাড়া, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করলে তা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সাথে সাংঘর্ষিক।
বাংলাদেশের বিকল্প সামরিক শক্তি বৃদ্ধি
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির তুলনায় বাংলাদেশের জন্য বিকল্প সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভব। আধুনিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো, এসব মাধ্যমে বাংলাদেশ তার নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে পারে। আঞ্চলিক জোট এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করাও বাংলাদেশের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই প্রধান লক্ষ্য
বাংলাদেশের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষমতা থাকলেও, দেশের নীতি এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এর বাস্তবায়নকে কঠিন করে তোলে। তবে, নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ বিকল্প পন্থা অনুসন্ধান করে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক আইন এবং দেশের শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল মন্ত্র—"সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়"—এটি অনুসরণ করেই দেশটি আগামী দিনে তার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
আল-আমিন ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল বিএসইসি
- সিলেটে ক্রিকেট মাঠে শোকের ছায়া: বিসিবি কর্মকর্তার অকাল মৃত্যু
- সোনার বাজার: বাংলাদেশে ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- বাঁচাও শেয়ারবাজার’: বিনিয়োগকারীদের গর্জনে কাঁপলো মতিঝিল
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২১ এপ্রিল ২০২৫)
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- সিলেটে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে: উত্তেজনা চলছেই
- শ্রীলঙ্কার ‘না’ বলে দেওয়া, ভারতের সেতু স্বপ্ন স্থগিত
- দুই কোম্পানিতে শেয়ারবাজার ডুবেছে : আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা