ঢাকা, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

বার্সেলোনা বনাম রিয়াল: ৫ গোলে রোমাঞ্চকর লড়াই, কে কেমন খেললেন?

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৭ ০৫:২৮:১৪
বার্সেলোনা বনাম রিয়াল: ৫ গোলে রোমাঞ্চকর লড়াই, কে কেমন খেললেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুন্দের শেষ মুহূর্তের গোল! রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা

বার্সেলোনা ফের রাজত্বের স্বাদ পেল! লা কার্তুহার উত্তাল ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে জুল কুন্দের নাটকীয় গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন হলো হানসি ফ্লিকের দল।

ম্যাচের প্রথমার্ধে বার্সেলোনার দাপট

ম্যাচের শুরু থেকেই বার্সেলোনা রিয়াল মাদ্রিদকে চেপে ধরে। বলের দখল ও আক্রমণে আধিপত্য করে কাতালানরা। মাত্র ২৯ মিনিটে সেই চাপের ফলও মেলে — তরুণ তারকা লামিন ইয়ামাল দারুণভাবে ফ্রান গার্সিয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল বাড়ান পেদ্রির দিকে। পেদ্রি দূরপাল্লার এক দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়িয়ে বার্সাকে এগিয়ে দেন।

রিয়াল মাদ্রিদ প্রথমার্ধজুড়ে কোনঠাসা ছিল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও রদ্রিগোরা কার্যত হারিয়ে গিয়েছিলেন বার্সার রক্ষণভাগের সামনে।

দ্বিতীয়ার্ধে মাদ্রিদের প্রত্যাবর্তন

বিরতির পরই কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নামান কার্লো আনচেলত্তি। আর তা-ই যেন বদলে দেয় মাদ্রিদের খেলায়। এমবাপ্পে মাঠে নেমে দ্রুত গতি আনে আক্রমণে। ৫৫ মিনিটে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের ফাউলের শিকার হন এমবাপ্পে, আর সেই ফ্রি-কিক থেকেই দুর্দান্ত শটে গোল করেন তিনি — সমতা ফেরায় লস ব্লাঙ্কোস।

ম্যাচের শেষ দিকে রাফিনহার একটি পেনাল্টি আদায় করলেও, ভিএআরের পর্যালচনায় সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যায়। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের নাটকীয়তা: কুন্দের বীরত্ব

অতিরিক্ত সময়ে দুই দলই ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। তখনই হিরো হয়ে ওঠেন জুল কুন্দে। ব্রাহিম দিয়াজের সামনে বল ছিনিয়ে নিচু শটে বল পাঠিয়ে দেন মাদ্রিদের জালে, এনে দেন ৩-২ গোলের জয়!

শেষ মুহূর্তে গাভির একটি ফাউলের কারণে রিয়াল পেনাল্টির সুযোগ পেতে পারত, কিন্তু এমবাপ্পের অফসাইডের কারণে সেই সম্ভাবনা বাতিল হয়।

শেষ পর্যন্ত, অতিরিক্ত উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচ শেষে কোপা দেল রে ট্রফি নিজেদের করে নেয় বার্সেলোনা।

বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের রেটিং:

গোলরক্ষক ও রক্ষণভাগ:

ওয়োজেচ শেসনি (৬/১০): বেশি পরীক্ষা নিতে হয়নি, তবে এমবাপ্পের একটি শট দারুণভাবে ঠেকান।

জুল কুন্দে (৮/১০): ভিনিসিয়ুসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি জয়সূচক গোলের নায়ক।

পাউ কুবারসি (৭/১০): বেলিংহামের পাস কাটিয়ে বড় ভূমিকা রাখেন প্রথম গোলে।

ইনিয়গো মার্টিনেজ (৬/১০): ভাগ্যবান, অফসাইডের কারণে পেনাল্টি এড়ান।

জেরার্ড মার্টিন (৬/১০): রদ্রিগোকে কার্যত অদৃশ্য রাখেন।

মিডফিল্ড:

পেদ্রি (৭/১০): দারুণ গোল করেন এবং প্রথমার্ধে খেলার ছন্দ নির্ধারণ করেন।

ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং (৫/১০): প্রথমার্ধে ভালো খেললেও এমবাপ্পের গতির সামনে ভুগেছেন।

দানি অলমো (৬/১০): আক্রমণে কিছুটা নিষ্প্রভ ছিলেন, চোট পেয়ে সরে যান।

আক্রমণভাগ:

লামিন ইয়ামাল (৮/১০): দুর্দান্ত দক্ষতায় পেদ্রির গোল বানিয়ে দেন। পরে কিছুটা ম্লান।

ফেরান তোরেস (৬/১০): প্রথমে ছন্দে ছিলেন না, পরে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গোল।

রাফিনহা (৫/১০): বড় দুটি সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচ কঠিন করে তুলেছিলেন।

বদলি খেলোয়াড় ও কোচ:

ফারমিন লোপেজ (৬/১০): অতিরিক্ত সময়ে কিছুটা প্রাণ আনেন।

গাভি (৫/১০): কিছু ভুল সিদ্ধান্ত।

রোনাল্ড আরাউহো (৭/১০): রক্ষণভাগ মজবুত করেন।

এরিক গার্সিয়া (৫/১০): প্রভাব ফেলতে পারেননি।

পাউ ভিক্টর (N/A): জয়ী গোলের আগে বদলি হিসেবে আসেন।

হানসি ফ্লিক (৬/১০): প্রথমার্ধের পরিকল্পনা দুর্দান্ত, তবে দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা চাপে পড়েছিলেন।

রিয়াল মাদ্রিদ প্লেয়ার রেটিংস:

থিবো কুর্তোইস (৫/১০):

পেড্রির গোলটি কিছুই করার ছিল না, তবে দ্বিতীয় গোলের আগে কিছুটা খোলসা না থাকায় এবং শেষ গোলটিতে কিছুটা ভুল ছিল।

লুকাস ভাজকেজ (৬/১০):

দ্বিতীয়ার্ধে রাফিনহা ও অন্যান্য আক্রমণকারীদের সঠিকভাবে সামলাতে সক্ষম ছিলেন।

আন্তোনিও রুদিগার (৬/১০):

ফেরান তোরেসকে আটকে রাখতে ব্যর্থ হলেও পুরো ম্যাচে সাধারণভাবেই ভালো পারফর্ম করেছেন।

ব্রাহিম দিয়াজ (N/A):

সর্বশেষ মুহূর্তে কুন্দের কাছে বল হারানো ছিল একটি বড় ভুল, যার জন্য মাদ্রিদ ম্যাচটি হারালো।

কিলিয়ান এমবাপ্পে (৮/১০):

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে এসে খেলার চেহারা বদলে দেন। দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল করেন।

অরেলিয়েন তচৌআমেনি (৮/১০):

করনার থেকে সুন্দর হেডারে রিয়ালকে এগিয়ে নিয়ে যান, কিন্তু পুরো ম্যাচে বার্সেলোনার আক্রমণের মুখে কিছুটা একা ছিলেন।

চূড়ান্ত রেটিং এবং ম্যানেজার:

কার্লো আনচেলত্তি (৪/১০):

ম্যাচের আগের পরিকল্পনাগুলো ভালো ছিল না। দলের মধ্যে সঠিক সমন্বয়ের অভাব ছিল, বিশেষত রক্ষণে। এমবাপ্পেকে অন্তর্ভুক্ত করার পরও কিছুটা সঠিক রক্ষণমুখী পরিকল্পনা গড়ে উঠেনি।

রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এটি এক দুঃখজনক পরাজয়। যদিও তারা দ্বিতীয়ার্ধে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বার্সেলোনা খুবই শক্তিশালী এবং কার্যকর ছিল। ব্রাহিম দিয়াজের ভুলটি মাদ্রিদকে কপা দেল রে থেকে দূরে রাখে, এবং বার্সেলোনা এবারের শিরোপা উপভোগ করতে থাকে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ