ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

৮ দিনের নোটিশেই চাকরি শেষ! আসছে নতুন সরকারি আইন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৪ ১৬:৩৩:৩১
৮ দিনের নোটিশেই চাকরি শেষ! আসছে নতুন সরকারি আইন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুতির বিধান নিয়ে এগোচ্ছে সরকার

সরকারি চাকরি আর আগের মতো নিরাপদ নয়—এবার মাত্র ৮ দিনের নোটিশেই শেষ হতে পারে একজন সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ! তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুতি বা অব্যাহতির বিধান রেখে নতুন আইন সংশোধনের পথে হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার। শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দায়িত্বে গাফিলতি বা প্রশাসনিক কাজে বিঘ্ন ঘটালে, কঠোর এই আইনের আওতায় নেওয়া হবে তড়িৎ ব্যবস্থা।

সূত্র জানিয়েছে, এই আইনি পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পেলেই খসড়াটি মন্ত্রিসভায় উঠবে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছে—যে কোনো সরকারি কর্মকর্তা দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন ঘটালে বা প্রশাসনের নিয়ম ভাঙলে, তদন্ত ছাড়াই মাত্র ৮ দিনের নোটিশে তাকে চাকরিচ্যুত করা যাবে।

এই খসড়াটি মূলত ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯’-এর আদলে তৈরি হচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রশাসনের ভেতরে চলা পেশাগত দ্বন্দ্ব, অনুপস্থিতি ও শৃঙ্খলার অভাব—সব মিলিয়েই সরকার চাইছে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ।

কি আছে নতুন খসড়ায়?

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে—

অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ২ থেকে ৫ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হবে বা শুনানিতে অংশ নিতে হবে।

সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে বা দোষী প্রমাণিত হলে, কর্তৃপক্ষ ৩ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিয়ে শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

এ জন্য প্রয়োজন হবে না পূর্ণাঙ্গ তদন্ত বা দীর্ঘ প্রক্রিয়া।

কেন এই কঠোরতা?

সরকারের মতে, জুলাই-আগস্টে দেশের গণআন্দোলনের সময় বহু প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাদের পোস্টে অনুপস্থিত ছিলেন। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার মতো আইনি কাঠামো তৈরি করছে সরকার।

বিশেষজ্ঞদের মতভেদ

বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনের এমন পরিবর্তনে একদিকে যেমন শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হবে, অন্যদিকে তদন্তবিহীন ব্যবস্থা অনেক সময় চাকরিজীবীদের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে পারে। ফলে আইনটির প্রয়োগে ভারসাম্য রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

এক নজরে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো—

মাত্র ৮ দিনের নোটিশে চাকরি শেষ

তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুতি সম্ভব

২–৫ দিনের মধ্যে জবাব না পেলে শাস্তি

সরকারের দাবি—শৃঙ্খলা ফেরাতে এই ব্যবস্থা

বিতর্কও আছে—তদন্ত ছাড়া শাস্তি কি ন্যায্য?

রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ