ঢাকা, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

কোরবানি শুদ্ধ করতে এই ৩টি শর্ত মেনে চলুন

২০২৫ এপ্রিল ২৪ ১১:৫৫:১৬
কোরবানি শুদ্ধ করতে এই ৩টি শর্ত মেনে চলুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য সঠিক নিয়ত, শরিক ও হালাল উপার্জন নিশ্চিত করুন।

কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা একদিকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যম, অন্যদিকে সমাজের দরিদ্রদের সাহায্য করার সুযোগ। প্রতিটি মুসলিমের জন্য কোরবানি একটি বিশেষ দিবসের অংশ, যেখানে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায়। তবে, কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। আজকে জানব, কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে, এবং কোরবানি শরিক নির্বাচনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক।

কোরবানি কবুল হওয়ার শর্ত: নিয়ত ও তাকওয়া

কোরবানির শুদ্ধতার জন্য প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে সঠিক নিয়ত। কোরবানি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা উচিত, না যে শুধুমাত্র গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে। কোরবানি গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, বরং কোরবানির মাধ্যমে আপনার আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং তাকওয়া পৌঁছে। আল্লাহ তায়ালা সুরা হজ, আয়াত ৩৯-এ বলেন: “তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ, সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাকো।”

কোরবানি করার সময় অবশ্যই এই উদ্দেশ্য মেনে নিতে হবে, যেন আপনার কোরবানি সঠিকভাবে কবুল হয়।

কোরবানির পশু ও শরিক নির্বাচন: সতর্ক থাকুন

কোরবানি অনেক সময় একাধিক শরিকের মাধ্যমে করা হয়, কিন্তু শরিক নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পশু নির্বাচন, বয়স এবং অংশ ভাগের বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে।

পশুর বয়স:

উটের বয়স হতে হবে পাঁচ বছর।

গরু ও মহিষের বয়স হতে হবে দুই বছর।

শরিক নির্বাচনে সতর্কতা:

কোরবানি পশুর অংশ সবার জন্য সমান হতে হবে। এক শরিকের অংশ অন্য শরিকের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যদি এমন হয়, তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না।

শরিকদের নিয়ত অবশ্যই সঠিক হতে হবে। যদি কেউ কেবল গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে কোরবানি করে, তবে তার কোরবানি সহিহ হবে না, এবং অন্য শরিকদের কোরবানি শুদ্ধ হবে না।

এইসব শর্ত পূরণ না হলে কোরবানি আল্লাহর কাছে কবুল হবে না।

হারাম উপার্জন: কোরবানি শুদ্ধ হতে বাধা

কোরবানি করতে গেলে হারাম উপার্জন ব্যবহার করা একেবারেই নিষিদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ব্যয় কর তোমাদের অর্জিত হালাল সম্পদ থেকে।” (সুরা বাকারা: ২৬৭)। হারাম উপার্জন দিয়ে কোরবানি করলে সেটা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

এই কারণে কোরবানি করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে, আপনি যা উপার্জন করছেন তা সম্পূর্ণভাবে হালাল।

কোরবানি: একটি মহান ইবাদত

কোরবানি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় রীতি নয়, এটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সঠিক নিয়ত, উপযুক্ত পশু নির্বাচন এবং হালাল উপার্জন দিয়ে কোরবানি করা, আল্লাহর কাছে এটি এক বিরাট দান। কোরবানি আমাদের শিখিয়ে দেয় ত্যাগ, সম্পদ ভাগাভাগি এবং পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি।

সুতরাং, কোরবানি করার সময় সঠিকভাবে শর্তগুলো পূরণ করুন, যাতে আপনার কোরবানি আল্লাহর কাছে কবুল হয় এবং সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

আব্দুর রহিম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ