ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

মে-জুনে রাজপথে শোডাউনের ছক: মাঠে নামছে আ.লীগের ১৫ লাখ কর্মী

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৩ ১১:০৩:০২
মে-জুনে রাজপথে শোডাউনের ছক: মাঠে নামছে আ.লীগের ১৫ লাখ কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ধানমন্ডির বৈঠকে ছদ্মবেশে মিছিল, বৈদ্যুতিক ডিভাইস ও গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা

“পালাবো না, কোথায়ই বা পালাবো? দরকার হলে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়েই আশ্রয় নেব!”

ব্যঙ্গাত্মক হলেও এই মন্তব্যে যেন ফুটে উঠেছে রাজনীতির মঞ্চে নতুন উত্তাপের আভাস।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ফের সক্রিয় হচ্ছে রাজপথে। এবার আর হঠাৎ ঝটিকা মিছিল নয়, বরং পরিকল্পিত, ছকে বাঁধা ও ব্যাপক শোডাউনের ছাপ স্পষ্ট। দলীয় সূত্র ও গোয়েন্দা তথ্য বলছে, মে-জুনে রাজপথ ‘দখলে’ রাখতে চায় দলটি।

ধানমন্ডি ৩২ থেকে সারা দেশে, ভার্চুয়াল বৈঠকে বিস্তারিত রূপরেখা

সম্প্রতি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগের একটি অভ্যন্তরীণ টেলিগ্রাম গ্রুপে চার ঘণ্টার বৈঠক হয়। এতে অংশ নেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ দেশব্যাপী জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা। বৈঠকে রাজপথে ফেরার বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

নির্দেশনা অনুযায়ী:

প্রতিটি জেলায় স্থানীয় কর্মীদের মাধ্যমে নিয়মিত মিছিল হবে

প্রয়োজনে ছদ্মবেশে—রিকশাচালক, অটোরিকশা চালক বা বাস হেল্পার সেজে মিছিলে অংশ নেওয়া হবে

আত্মরক্ষার জন্য বৈদ্যুতিক শক ডিভাইস ও অন্যান্য সরঞ্জাম বহনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে

লক্ষ্যমাত্রা ১৫ লাখ কর্মী, গ্রেপ্তারের শঙ্কা সত্ত্বেও পরিকল্পনা অটুট

সূত্র বলছে, মে ও জুন মাসজুড়ে দেশে অন্তত ১৫ লাখ কর্মীকে রাজপথে নামানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এমন পরিকল্পনাও রয়েছে—প্রতি এক হাজার কর্মীর মাঝে যদি ২০০ জন গ্রেপ্তারও হন, বাকিরা মাঠে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। উদ্দেশ্য, রাজপথে টানা উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

রাজধানীর মোড়ে মোড়ে প্রতিদিনই মিছিল ও ফটোসেশন

বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে প্রতিদিনই আকস্মিক মিছিল ও কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে ফটোসেশন ও তাৎক্ষণিক প্রচারণাও চালানো হচ্ছে, যা দলটির রাজপথে সক্রিয়তার নতুন কৌশলেরই অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তিন দিনে গ্রেপ্তার প্রায় পাঁচ হাজার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যমতে, গত ৭২ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৭৬৬ জনকে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্ভাব্য সংঘাত ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি এড়াতে মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়িয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবারের পরিস্থিতি অতীতের তুলনায় ভিন্ন। এখন আর শুধু ব্যানার ও শ্লোগানে সীমাবদ্ধ নেই রাজনৈতিক শোডাউন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃশ্যমানতা, পরিকল্পিত উপস্থিতি ও প্রতিক্রিয়া তৈরি করাই মূল লক্ষ্য।

রাজপথে ফেরার ঘোষণা, তৎপরতা ও প্রস্তুতির এই ধারা ইঙ্গিত দিচ্ছে—মে ও জুন হতে যাচ্ছে দেশের রাজনীতির জন্য উত্তপ্ত সময়। আওয়ামী লীগের মাঠে ফেরার এই ছক শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করবে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিক্রিয়ার উপর।

রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ