ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

জ্বর-সর্দি বারবার হচ্ছে? এই ৫টি সহজ টিপস মেনে চললেই মিলবে উপশম

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২১ ০৮:৫১:২৮
জ্বর-সর্দি বারবার হচ্ছে? এই ৫টি সহজ টিপস মেনে চললেই মিলবে উপশম

নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের যেকোনো সময়েই সাধারণ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হওয়া একেবারেই স্বাভাবিক। কিন্তু একটু যত্ন না নিলে এই ছোট সমস্যাই হয়ে উঠতে পারে দৈনন্দিন জীবনের বড় ভোগান্তি। তাই জানুন এই সাধারণ অসুস্থতার পেছনের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া উপশমের উপায়।

সাধারণ সর্দি কী?

সাধারণ সর্দি, যাকে ইংরেজিতে "common cold" বা "sniffles" বলা হয়, এটি মূলত একটি ভাইরাসজনিত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ। এর প্রধান আক্রমণস্থল হলো নাক, গলা ও শ্বাসনালির উপরের অংশ।

প্রধান লক্ষণগুলো কী?

নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা ঘন ঘন সর্দি ঝরা

গলা খুসখুসে অনুভব বা ব্যথা

হাঁচি ও কাশি

মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা এবং ক্লান্তিভাব

হালকা জ্বর (কখনও কখনও)

সাধারণত এই উপসর্গগুলো ৭–১০ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়।

সর্দির কারণ কী?

প্রধান কারণ হলো রাইনোভাইরাস, যা প্রায় ৮০% সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী। এটি ছড়ায়—

বাতাসে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে

সংক্রমিত ব্যক্তির স্পর্শে

দূষিত বস্তু স্পর্শ করে চোখ-মুখ-নাকে হাত দিলে

শীতকালে সর্দির প্রকোপ বেশি থাকে, কারণ তখন ভাইরাসগুলো বেশি সক্রিয় থাকে এবং ঠান্ডা পরিবেশ শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

সর্দি ও ফ্লুর মধ্যে পার্থক্য কী?

বিভাগবিবরণ
সাধারণ লক্ষণ
  • ঠাসা নাক বা সর্দি
  • গলা ব্যথা বা গলার খুসখুস
  • কাশি এবং হাঁচি
  • মাথাব্যথা ও ক্লান্তি
  • শরীর ব্যথা
মূল কারণ
  • রাইনোভাইরাস সংক্রমণ (প্রায় ৮০%)
  • আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা
  • শীতকালীন আবহাওয়ায় ভাইরাসের সক্রিয়তা বৃদ্ধি
চিকিৎসা পদ্ধতি
  • বিশ্রাম নেওয়া
  • প্রচুর পানি ও তরল পান করা
  • ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ (যেমন Zyrtec, Vicks)
  • ডিকনজেস্ট্যান্ট নাসাল স্প্রে
  • গরম পানীয় (আদা চা, মধু পানি)
প্রতিরোধের উপায়
  • নিয়মিত হাত ধোয়া
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
  • অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
  • ফ্লু ভ্যাকসিন গ্রহণ
  • মুখ, নাক ও চোখ না ছোঁয়া

চিকিৎসা ও ঘরোয়া উপশমের উপায়

বিশ্রাম: শরীরকে বিশ্রাম দিন। এতে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে।

তরল পান: বেশি পানি, আদা চা, স্যুপ ও ফলের রস পান করুন।

ওষুধ:

Zyrtec, Vicks VapoRub – সর্দির উপশমে সহায়ক

প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন – জ্বর ও ব্যথা কমাতে

ওষুধ নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

নাক বন্ধ থাকলে:

নাসাল স্প্রে বা ডিকনজেস্ট্যান্ট ব্যবহার করতে পারেন

গরম পানিতে ভাপ নিতে পারেন

গলা ব্যথা হলে:

মধু-মেশানো গরম পানি

লবণ পানিতে গার্গল

শিশুদের ক্ষেত্রে করণীয়

৫ বছরের নিচের শিশুরা সর্দি-জ্বরে বেশি ভোগে। তাদের ক্ষেত্রে:

তরল খাবার দিন

গরম পানির ভাপ দিন

ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন

প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

প্রতিরোধের সহজ উপায়

নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া

অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা

নাক, মুখ ও চোখে হাত না দেওয়া

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা

শীতকালে ফ্লু ভ্যাকসিন গ্রহণ

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?

জ্বর এক সপ্তাহের বেশি থাকলে

শ্বাসকষ্ট বা বুকের ব্যথা হলে

শিশু বা বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে লক্ষণ গুরুতর হলে

সাধারণ সর্দি একদিকে যেমন ক্ষতিকর নয়, তেমনই অবহেলা করলে জটিলতাও তৈরি করতে পারে। তাই প্রতিদিনের কিছু সাধারণ অভ্যাস—হাত ধোয়া, বিশ্রাম, পরিমিত খাবার ও পরিচ্ছন্নতা—এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ