ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

Bangladesh vs Zimbabwe:

জিম্বাবুয়ে হয়ে উঠলো অস্ট্রেলিয়া, দৌড়ের ওপর শান্তর বাংলাদেশ!

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২০ ১৯:৩০:১৮
জিম্বাবুয়ে হয়ে উঠলো অস্ট্রেলিয়া, দৌড়ের ওপর শান্তর বাংলাদেশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটে টেস্ট সিরিজে শুরুটা হতে পারতো আত্মবিশ্বাস জাগানিয়া। প্রতিপক্ষ যে জিম্বাবুয়ে—টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দল। কিন্তু বাস্তব চিত্র একেবারে উল্টো। মনে হচ্ছে, জিম্বাবুয়ে নয়, যেন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা!

প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ এখন দাঁড়িয়ে গেছে বড় সংকটে। কারণ জিম্বাবুয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে এখনও ১০ উইকেট হাতে রেখে ৬৭ রান তুলে ফেলেছে মাত্র ১৪.১ ওভারে। দ্বিতীয় দিন শুরুতে বাংলাদেশ যদি দ্রুত উইকেট তুলে নিতে না পারে, তাহলে ম্যাচ হাতছাড়া হওয়াটা শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

ব্যাটিং ধস: বাংলাদেশ নামলো গভীর খাদের দিকে

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় (১৪) ও শাদমান ইসলাম (১২) ফিরে যান দ্রুত। কিছুটা আশার আলো দেখান মুমিনুল হক ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, তবে স্থায়ী হতে পারেননি কেউই।

মুমিনুল খেলেন দায়িত্বশীল ৫৬ রানের ইনিংস, যা দলের পক্ষে সর্বোচ্চ।

শান্ত করেন ৪০ রান।

এরপর একে একে ফিরে যান মুশফিক (৪), জাকের আলি (২৮), মিরাজ (১)।

শেষদিকে হাসান মাহমুদের ১৯ রান কিছুটা রক্ষা করে স্কোরবোর্ডকে।

বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায় মাত্র ৬১ ওভারে ১৯১ রানে।

জিম্বাবুয়ের বোলিং আক্রমণে তাণ্ডব: মাসাকাজ্জা হয়ে উঠলেন ‘সাকিব’

জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন ওয়েলিংটন মাসাকাজ্জা। বাঁহাতি এই স্পিনার বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপকে একাই ভেঙে দেন।

৩ উইকেট নেন মাত্র ৭ রানে, সেকেন্ড সেশনে তৈরি করেন ভয়ঙ্কর ধস।

মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলামের উইকেট তিনিই নেন।

মুজারাবানি নেন ৩ উইকেট, শুরুতেই আঘাত হানেন।

নিয়াউচি এবং মাধেভেরে-ও ছিলেন কার্যকর।

যে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট একসময় বলেছিল, “নাহিদ রানার বল খেলতে পারবে না জিম্বাবুয়ে”—আজ সেই দলই মুজারাবানি-মাসাকাজ্জার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি!

জিম্বাবুয়ের আত্মবিশ্বাসী শুরু: ৬৭/০, এখনও পিছিয়ে ১২৪ রানে

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১৯১ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ের শুরুটাই ছিল কল্পনাতীত।

ব্রায়ান বেনেট খেলেন ঝড়ো ৩৭ বলে ৪০ রান, হাঁকান ৬টি চার।

বেন কারান খেলেন ৪৯ বলে ১৭ রান।

মাত্র ১৪.১ ওভারে ৬৭ রান তুলে নেয় তারা, একটি উইকেটও হারায়নি। বাংলাদেশি পেস ও স্পিন আক্রমণের সামনে জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা ছিলেন অপ্রতিরোধ্য।

প্রশ্নের মুখে টিম ম্যানেজমেন্ট ও কাঠামো

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সমালোচনার ঝড় শুরু হয়ে গেছে। প্রশ্ন উঠছে—

কেন এখন আর দলের পরিকল্পনায় বাঁহাতি অর্থোডক্স স্পিনার নেই?

সাকিব আল হাসানের অবর্তমানে সেই জায়গা কে নিচ্ছেন?

কেন এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিজের একটা মাঠ কিনতে পারেনি?

টেস্ট ফরম্যাটে যে দলটা ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারায়, তারা কতটা প্রস্তুত?

এমনকি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা পর্যন্ত সম্প্রচারের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি কোনও বেসরকারি টিভি চ্যানেল। বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও নেই মাঠে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবনমন দেখে অনেকে বলছেন—এটা যেন ‘ক্রিকেট নয়, নাটক’।

এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কি সম্ভব?

বাংলাদেশ দল যদি দ্বিতীয় দিন সকালে উইকেট তুলতে না পারে, তাহলে বড় লিড নিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে পারে। জিম্বাবুয়ে এখন ১২৪ রানে পিছিয়ে, হাতে ১০ উইকেট—এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচে ফিরে আসা যে কতটা কঠিন হবে, সেটা বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না।

চলমান টেস্ট থেকে একটাই বার্তা স্পষ্ট—বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন প্রয়োজন বাস্তবায়ন, পরিকল্পনা নয়।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ