ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

মশিউর সিকিউরিটিজে ১৬১ কোটি টাকার জালিয়াতি! বিএসইসি কী ব্যবস্থা নেবে?

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২০ ১১:৩১:১১
মশিউর সিকিউরিটিজে ১৬১ কোটি টাকার জালিয়াতি! বিএসইসি কী ব্যবস্থা নেবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এক ভীতিকর ঘটনা ঘটেছে—ডিএসই সদস্য প্রতিষ্ঠান মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে উঠেছে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাৎ এবং জালিয়াতির অভিযোগ। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও কর্মকর্তারা মিলে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৬১ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন।

কী ঘটেছে?

এত বড় অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তৎপর হয়েছে। মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—প্রায় ৬৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সিসিএ (সমন্বিত গ্রাহক হিসাব) থেকে এবং ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বিও (বিনিয়োগকারী শনাক্তকরণ) হিসাব থেকে শেয়ার বিক্রি করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএসইসি

বিএসইসি জানিয়েছে, এই ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাদের পরিদর্শন দল গত ২০ আগস্ট মশিউর সিকিউরিটিজের সিসিএ-তে ৬৮ কোটি টাকার বেশি ঘাটতি দেখতে পায়। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব থেকে বেআইনিভাবে ৯২ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে।

এছাড়া, বিএসইসি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ পাঠানোর পাশাপাশি মশিউর সিকিউরিটিজের কর্মকর্তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে, ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-কেও এই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে, যাতে তাদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়।

কেন এত বড় ধাক্কা?

এটি বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। কারণ, এর আগে ২০২০ সালে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ এবং ২০২১ সালে বানকো সিকিউরিটিজে যথাক্রমে ১২৪ কোটি ও ১২৮ কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল। তবে, মশিউর সিকিউরিটিজের ঘটনা আরও গুরুতর, কারণ এটি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করতে পারে এবং আরও সংকট তৈরি করতে পারে।

বিএসইসি কী করছে?

এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিএসইসি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার রিপোর্টের ভিত্তিতে মশিউর সিকিউরিটিজের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএসইসি বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং যেকোনো ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

এটি কি শেষ?

না, এটি শুধু একটি ঘটনা নয়, বরং দেশের শেয়ারবাজারে আরও অনেক অদেখা ও অপ্রকাশিত দুর্নীতির সূত্রপাত হতে পারে। গুগল বা অন্যান্য অনুসন্ধান ইঞ্জিনের মাধ্যমে যদি এই কেসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়, তবে এটি শেয়ারবাজারের স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলবে।

এখন, পাঠকদের প্রশ্ন—"আমরা কি আমাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবো?" এই অবস্থায় বিএসইসি এবং দুদক যেন আরো দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ