ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

সাকিবের রাজনীতি নিয়ে শফিকুল আলমের কঠোর মন্তব্য

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৭ ১৫:২০:৫৩
সাকিবের রাজনীতি নিয়ে শফিকুল আলমের কঠোর মন্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান যখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন, তখন তার এই সিদ্ধান্ত জনসেবার উদ্দেশ্যে ছিল না, বরং ব্যক্তিগত লাভের জন্য রাজনীতিতে পা রেখেছেন—এমনটাই দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম। তার মতে, সাকিবের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, এটি একটি সুযোগবাদী সিদ্ধান্ত, যা তার ব্যক্তিগত স্বার্থের দিকে মনোযোগী।

শফিকুল আলম বুধবার (১৬ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক বিস্তৃত পোস্টে সাকিবের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, “প্রতিটি নাগরিকের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন হলো—সে কোন দলের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে?” তিনি দাবি করেন যে, সাকিব যখন এমন এক দলের সঙ্গে জড়িত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, তখন তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

শফিকুল আলম বলেন, "গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, মিথ্যা আইনি অভিযোগ—এমন নানান অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সাকিবের আওয়ামী লীগে যোগদান ছিল একটি রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত।" তার ভাষায়, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না, বরং এটি ছিল একটি শাসনব্যবস্থার প্রতি নীরব সমর্থন, যা আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত।

তিনি আরো বলেন, “সাকিব কেবল জনসাধারণের মনোভাব ভুল বুঝেননি, তিনি তার সিদ্ধান্তের নৈতিক গুরুত্বও উপেক্ষা করেছেন।” বিশেষ করে, মাগুরায় বিরোধী দলের কর্মীদের হত্যার পর সাকিবের নীরবতা, কোনো প্রতিবাদ বা ন্যায্যতার দাবি না করা, শফিকুল আলমের কাছে অত্যন্ত হতাশাজনক ছিল। তিনি মন্তব্য করেন, "এটি কেবল হতাশাজনক ছিল না, এটি ছিল বধিরতা।"

গণমাধ্যমে সাকিবের ব্যাপক প্রশংসিত ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে শফিকুল আলম বলেন, "সাকিব বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হতে পারেন, কিন্তু প্রতিভা কোনোভাবেই তাকে দায়মুক্তি দেয় না।" তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সাকিব একদিন জাতিসংঘের ১২৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি পড়বেন, যেখানে তার রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের কর্মকাণ্ডের ভয়াবহতা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

শফিকুল আলম তাঁর পোস্টের শেষে উল্লেখ করেন, “বর্তমানে সাকিবের কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা হচ্ছে—লোভ। তার এই রাজনৈতিক পদক্ষেপে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সম্পর্ক তার উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে—ব্যক্তিগত লাভ, জনসেবা নয়।”

এই মন্তব্যের পর সাকিবের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে দেশজুড়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে, যা কেবল খেলাধুলার জগতেই নয়, বরং রাজনৈতিক মহলেও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সাকিব কি এই সমালোচনা গ্রহণ করবেন, নাকি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন, তা সময়ই বলে দেবে।

ফারুক/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ