ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

শেখ হাসিনার ৮ মিনিটের ভিডিও বার্তা: ইতিহাস, শিল্প ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৪ ২০:৫৫:৫২
শেখ হাসিনার ৮ মিনিটের ভিডিও বার্তা: ইতিহাস, শিল্প ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন, তা যেন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ঝড় বইয়ে দিয়েছে। আট মিনিটের সেই ভাষণে শেখ হাসিনা শুধু নতুন সরকারের সমালোচনা করেননি—তিনি তাদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তুলেছেন।

“আগুন নিয়ে খেলছেন... সেই আগুন আপনাকেও পুড়িয়ে ফেলবে”

শেখ হাসিনা সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেন,

“তিনি একজন আত্মকেন্দ্রিক, ঋণগ্রস্ত, ক্ষমতালোভী ব্যক্তি। বিদেশি শক্তির সহায়তায় তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আগুন নিয়ে খেলছেন? মনে রাখবেন, আগুন খেলনা নয়। একদিন সেই আগুনই আপনাকে গ্রাস করবে।”

মুছে ফেলা হচ্ছে ইতিহাস, অপমান করা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের

তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের চিহ্নগুলো পরিকল্পিতভাবে মুছে ফেলা হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সগুলো যেগুলো এক সময় গর্বের প্রতীক ছিল, সেগুলোকেও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।

“ড. ইউনূস কি এসব কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করেন?”—প্রশ্ন ছুড়ে দেন হাসিনা।

আবু সাঈদের মৃত্যু: শুধু দুর্ঘটনা, না কি ষড়যন্ত্র?

ছাত্রনেতা আবু সাঈদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন,

“এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। যারা আজ ক্ষমতায়, তারা ভয় পায় প্রতিবাদকে।”

শিল্প খাতের পতন ও অর্থনৈতিক ধ্বংসের অভিযোগ

ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন,

“আমাদের হাজার হাজার কারখানা এখন বন্ধ। আওয়ামী লীগের নেতাদের কারখানাগুলোতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হোটেল, হাসপাতাল—সবকিছু আজ ধ্বংসের মুখে।”

তিনি এও দাবি করেন, দেশের অর্থনীতি এখন ধ্বংসপ্রায় এবং সাধারণ মানুষ চরম অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।

“দেশে ফিরবো”—আবারো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ শেখ হাসিনা

২০২৪ সালের আগস্টে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম বড় বক্তব্য।ভিডিওতে তিনি বলেন,

“আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, কারণ আমার দেশে ফিরে আরও অনেক কিছু করার বাকি। আমার আওয়াজ থামেনি, থামবেও না।”

নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: তবুও অটল অবস্থান

ঢাকায় তাঁর নামে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন,

“যারা দেশ গড়েছে, তাদের আজ রাষ্ট্রদ্রোহী বানানো হচ্ছে। এটাই কি নতুন বাংলাদেশের চেহারা?”

রাজনৈতিক উত্তেজনায় নতুন মোড়

এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই বলছেন—এটি ছিল "প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা"।

বিশ্লেষণ: বার্তা শুধু একটি বক্তব্য নয়, এটি এক প্রত্যাবর্তনের সিগন্যাল

শেখ হাসিনার এ ভিডিও শুধু রাজনৈতিক সমালোচনা নয়, এটি এক নতুন লড়াইয়ের ডাক।

একদিকে ইতিহাস মুছে ফেলার অভিযোগ, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার দৃপ্ত প্রতিজ্ঞা—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক প্রবল ঢেউ তুললেন তিনি।

মো: রাজিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ