ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

শেয়ারবাজারে টিকে থাকতে উৎসে কর কমানোর জোর দাবি

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৩ ১১:১৫:০২
শেয়ারবাজারে টিকে থাকতে উৎসে কর কমানোর জোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজার দিনকে দিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বিনিয়োগকারীর আস্থা কমছে, লেনদেন পড়ছে, আর সেই দুরবস্থার মধ্যেই ব্রোকারহাউজগুলোকে লোকসানে থেকেও উৎসে কর দিতে হচ্ছে!

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য উৎসে করের হার কমানো ও লোকসানে কর সমন্বয়ের সুযোগ রাখার দাবি জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।

শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই দাবি তুলে ধরেন ডিবিএর নেতারা।

লেনদেনে ৫০ টাকা কর, অথচ মুনাফা নেই!

বর্তমানে শেয়ার লেনদেনে প্রতি ১ লাখ টাকায় কর দিতে হয় ৫০ টাকা, যা ০.০৫% হারে উৎসে কর হিসেবে কর্তন করা হয়। অথচ একই পরিমাণ লেনদেনে ভারতে কর লাগে ১০ রুপি, পাকিস্তানে মাত্র ৬৫ পয়সা!

ডিবিএ জানায়,

ভারতে কর: ০.০৫%

পাকিস্তানে: ০.০০০৬৫%

সিঙ্গাপুরে: ০.০০৭৫%

হংকংয়ে: ০.০০৫৬৫%

মালয়েশিয়া, আমিরাত ও তুরস্কে: শেয়ার লেনদেনে কোনো উৎসে কর নেই!

তারা বলছেন, ২০০৫ সালে বাংলাদেশে করের হার ছিল মাত্র ০.০১৫%, যা এখন বেড়ে তিনগুণেরও বেশি হয়েছে।

লোকসানে কর আদায়—'অবিচার' বলছে ব্রোকাররা

ডিবিএর দাবি, দেশের প্রায় সব ব্রোকারহাউজ এখন লোকসানে চলছে। তারা বলেন,

“কোনো প্রতিষ্ঠান যখন মুনাফা করতে পারছে না, তখন তার কাছ থেকে কর আদায় করা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।”

আয়কর আইনের মূল দর্শন অনুযায়ী কর আসার কথা নিট মুনাফার উপর, অথচ শেয়ারবাজারে বাস্তবতা তার উল্টো।

বিনিয়োগ সম্মেলনেও শেয়ারবাজারের অনুপস্থিতি!

সম্প্রতি দেশে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত থাকলেও শেয়ারবাজার ছিল কার্যত অনুপস্থিত। কোনো বুথ, কোনো সেমিনারে এর কোনো ভূমিকা ছিল না।

ডিবিএ নেতারা বলেন,

"বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এক্সিট রুট খোঁজেন। শেয়ারবাজারই একমাত্র স্বচ্ছ ও নিরাপদ এক্সিট রুট—তবুও এই খাতটিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।"

শেয়ারবাজারের জন্য সময়োপযোগী কর সংস্কার প্রয়োজন

সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন,

“শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে হলে উৎসে কর যৌক্তিক হারে নামিয়ে আনতে হবে এবং লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানের জন্য কর সমন্বয়ের সুযোগ রাখতে হবে।”

তারা আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান সরকার দেশের অন্যান্য খাতের মতো শেয়ারবাজারেও নজর দেবে এবং বৃহৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে কর নীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনবে।

অনুষ্ঠানে যারা ছিলেন:

ডিবিএ প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম

ডিএসই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী

ডিবিএ ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোঃ সাইফুদ্দিন, সিএফএ

ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন

লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের এমডি নাসির উদ্দিন চৌধুরী

ব্র্যাক ইপিএস সিকিউরিটিজের সিইও আহসানুর রহমান

ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের সিইও সুমন দাস

সিটি ব্রোকারেজের এমডি আফফান ইউসুফ

মো: ফারুক/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ