ঢাকা, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

ঢাকার বিক্ষোভে নেতানিয়াহুর ছবি পেটানো, ইসরায়েলি মিডিয়ায় আলোড়ন

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১২ ২৩:১১:৪০
ঢাকার বিক্ষোভে নেতানিয়াহুর ছবি পেটানো, ইসরায়েলি মিডিয়ায় আলোড়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, ১২ এপ্রিল ২০২৫ — সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেন আজ হয়ে উঠেছিল গাজার প্রতিচ্ছবি। একটানা আগ্রাসন আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল রাজধানী ঢাকা। প্রায় ১ লাখ মানুষ একসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের জন্য রাস্তায় নেমে আসেন, তাদের কণ্ঠে ছিল একটাই স্লোগান—“ফ্রি ফ্রি, ফিলিস্তিন!”

এই বিশাল বিক্ষোভ শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এবং বিশ্বখ্যাত বার্তা সংস্থা এপি (Associated Press) এ নিয়ে প্রকাশ করেছে বিশদ প্রতিবেদন।

সমবেত প্রতিবাদে ধর্ম-বর্ণ ভুলে এক কাতারে মানুষ

এই আন্দোলনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল—এখানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টানসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশ নেন। পুরুষ, নারী, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত গাজায় শিশু হত্যার বিরুদ্ধে মুখর হয়ে ওঠেন।

প্রতীকী কফিন, নেতানিয়াহুর ছবির পুতুল পেটানো—বিক্ষোভে তীব্র বার্তা

এপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি সংবলিত পুতুল তৈরি করে প্রতীকী শাস্তি দেন। কারণ, তাদের মতে, এই বিশ্বনেতারাই গাজায় রক্তপাতের নেপথ্য সমর্থক।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা যায়, প্রতীকী কফিন সাজানো হয়েছে শিশুদের নামে, পাশে ছিল রক্তাক্ত পুতুল, যা গাজার বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিচিত্র।

টাইমস অব ইসরায়েলের শিরোনাম: “বাংলাদেশে নেতানিয়াহুর ছবি পেটানো হলো”

ইসরায়েলি পত্রিকা টাইমস অব ইসরায়েল এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে হেডলাইনেই লেখে:

“বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ মানুষের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ—পিটিয়েছে নেতানিয়াহু ও তার মিত্রদের ছবি।”

অন্যদিকে, এপি বলেছে, এই প্রতিবাদ “বিশ্বনেতাদের নৈতিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে গণচেতনার প্রতিচ্ছবি।”

রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে ফিলিস্তিনের পক্ষে একত্রিত বাংলাদেশ

এই প্রতিবাদে অংশ নেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বিভিন্ন ইসলামিক দল ও অসংখ্য সামাজিক সংগঠন। সব রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে এক হয়ে তারা জানিয়ে দেন—এই প্রতিবাদ দলীয় নয়, মানবিক।

বাংলাদেশের বার্তা: নির্যাতনের পাশে নয়, ন্যায়ের পাশে

বাংলাদেশের জনগণের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট। ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, বরং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি অবিচল সমর্থন রয়েছে। আজকের এই ঐতিহাসিক প্রতিবাদ সেই অবস্থানকে আরও উচ্চকণ্ঠে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছে।

কাজল/

বিশ্ব - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ