ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

প্লাস্টিক সার্জারির রাজধানী দক্ষিণ কোরিয়া: সৌন্দর্যের পেছনে ছুরি-কাঁচির দুনিয়া!

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১২ ০০:০৪:২৯
প্লাস্টিক সার্জারির রাজধানী দক্ষিণ কোরিয়া: সৌন্দর্যের পেছনে ছুরি-কাঁচির দুনিয়া!

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বের অন্যতম আধুনিক দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু এখানকার সৌন্দর্যের মাপকাঠি যেন রূপকথার মতো—নিখুঁত চোখ, পাতলা চিবুক, উজ্জ্বল ত্বক আর “পারফেক্ট ফেস শেপ”! এই সৌন্দর্যের সংজ্ঞাকে বাস্তবে রূপ দিতে লাখো তরুণ-তরুণী ভরসা রাখছেন প্লাস্টিক সার্জারিতে।

কেন এত জনপ্রিয় দক্ষিণ কোরিয়ায় প্লাস্টিক সার্জারি?

সামাজিক গবেষণা বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় কেবল সেলিব্রিটি নয়, সাধারণ মানুষও সৌন্দর্যের ‘একটি নির্দিষ্ট ছাঁচে’ নিজেদের ফেলতে আগ্রহী।

একজন কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, “সুন্দর না হলে ভালো চাকরি পাওয়া কঠিন। এমনকি ডেটিং অ্যাপেও লোকজন মুখ দেখে বিচার করে।”

অভিভাবকরা সন্তানদের হাই স্কুল পাসের উপহার হিসেবে ডাবল আইলিড সার্জারি করিয়ে দিচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে তো ১৫-১৬ বছর বয়সেও কসমেটিক সার্জারি হয়ে যাচ্ছে।

সমস্যার গভীরতা কোথায়?

এই প্রবণতা শুধু বাহ্যিক নয়, মানসিক চাপও বাড়াচ্ছে। অনেকেই সার্জারির পরেও আত্মতুষ্ট হতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ একাধিকবার অস্ত্রোপচারে যাচ্ছেন, যাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় “পারফেক্ট” দেখায়।

তরুণদের মাঝে নিজের চেহারা নিয়ে হতাশা, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি এবং পরিচয়ের সংকটও দেখা দিচ্ছে।

সমাজের চাপ, মিডিয়ার প্রভাব

K-pop তারকারা, বিউটি অ্যাপ, ফিল্টার, কোরিয়ান ড্রামা—সব মিলিয়ে মানুষের মাথায় গেঁথে গেছে একটি নির্দিষ্ট সৌন্দর্য আদর্শ।

এমনকি চাকরির ইন্টারভিউতে প্রার্থীর চেহারা নিয়েও ‘অপ্রকাশ্য বিচার’ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

সংখ্যার হিসাব:

কোরিয়া হেলথ ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষ প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন।

এর মধ্যে প্রায় ৭৪% নারী, এবং আশঙ্কাজনকভাবে ৩০% সার্জারি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে হয়েছে।

সমাধান কী?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন:

সমাজের সৌন্দর্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে

শিক্ষায় আত্ম-মূল্যবোধ ও আত্মবিশ্বাস জোরদার করতে হবে

মিডিয়াকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে

বাস্তব সৌন্দর্য ফিরে পাওয়ার সময় এখন!

সুন্দর হওয়া মানে শুধু বাহ্যিক নয়—নিজেকে ভালোবাসাই আসল সৌন্দর্য। কৃত্রিমতার মুখোশ সরিয়ে সমাজ যদি মানুষকে তার প্রকৃত রূপে গ্রহণ করতে শেখে, তবেই এই প্রবণতার অবসান ঘটবে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ