ঢাকা, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২

ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় করণীয় ও বর্জনীয়: চিকিৎসকের পরামর্শ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১১ ০৯:২১:৫৫
ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় করণীয় ও বর্জনীয়: চিকিৎসকের পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকাল একটু ক্লান্ত লাগলেই অনেকে হাত বাড়ান মাল্টিভিটামিনের বয়ামের দিকে। কেউ বলেন, “ইমিউনিটি বাড়াতে খাই”, কেউ বলেন “শক্তি আসে”। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া কি আদৌ নিরাপদ?

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হাসান মোস্তফা রাশেদ।

ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কি খাবারের বিকল্প?

“একদমই না,” বললেন ডা. হাসান।

ভিটামিন আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক, কিন্তু তা একা কখনোই পরিপূর্ণ খাবারের বিকল্প হতে পারে না। যেমন ধরুন—দুধ না খেয়ে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে আপনি শুধু ক্যালসিয়াম পাচ্ছেন, কিন্তু দুধে থাকা প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন ডি আর পাচ্ছেন না।

তাই খাবার বাদ দিয়ে সাপ্লিমেন্টে ভরসা মানেই পুষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হওয়া।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেলে কী হতে পারে?

ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট মূলত ওষুধের মতো। এর নির্দিষ্ট ডোজ আছে। সেই মাত্রা অতিক্রম করলেই শরীরে শুরু হতে পারে বিপত্তি। নিচে দেখে নিন কোন উপাদান অতিরিক্ত খেলে কী হয়:

উপাদানঅতিরিক্ত খাওয়ার ঝুঁকি
ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর, হাড়ে ব্যথা, হৃদরোগ
ভিটামিন A/D/E/K (ফ্যাট সলিউবল) শরীরে জমে গিয়ে খিঁচুনি, লিভার ক্ষতি, হাইপারভিটামিনোসিস
ভিটামিন B ও C (পানিতে দ্রবণীয়) মূত্র/মলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, সমস্যা তুলনামূলক কম

বিশেষ করে ক্যালসিয়াম, আয়রন বা ভিটামিন ডি বেশি খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। এমনকি কিডনি ফেইলিওর পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।

তাহলে সাপ্লিমেন্ট কখন খাব?

শরীর যদি ক্লান্তি, চুল পড়া, দাঁত নড়ানো, অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়া ইত্যাদি সংকেত দেয়, তখন চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা করে সঠিক ডোজের সাপ্লিমেন্ট দিতে পারেন।

নিজে থেকে ধারণা করে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া একেবারেই অনুচিত।

শুধুমাত্র সাপ্লিমেন্ট নয়, দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস

বাজারে যত আকর্ষণীয় মাল্টিভিটামিনই থাকুক না কেন, সেগুলো পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের বিকল্প হতে পারে না। ভিটামিন কখনো শক্তি উৎপাদন করে না, বরং খাবার থেকে শক্তি নিতে শরীরকে সহায়তা করে।তাই প্রতিদিন ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, ডিম, মাছের মতো প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

সতর্কতা:

ভিটামিন দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শে খাবেন

নিজে থেকে বাজারের সাপ্লিমেন্ট খাওয়া বিপজ্জনক

প্রাকৃতিক খাবারই হলো পুষ্টির প্রকৃত উৎস

অতিরিক্ত ডোজ = বিপদ!

প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিন

ভুলভাবে ভিটামিন খেয়ে লাভের বদলে যেন ক্ষতি না হয়। সুস্থ থাকতে হলে ডাক্তার, সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর সচেতনতা—এই তিনটিই যথেষ্ট!

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ