ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

১২৮ বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট: বাংলাদেশের সুযোগের সমীকরণ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১০ ১২:৩৫:২১
১২৮ বছর পর অলিম্পিকে ক্রিকেট: বাংলাদেশের সুযোগের সমীকরণ

নিজস্ব প্রতি্েদক: ১২৮ বছরের বিরতি শেষে অলিম্পিক গেমসে আবারও ফিরছে ক্রিকেট। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে ক্রিকেট থাকবে, এবং এবার এই খেলা হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগে অংশ নেবে মোট ৬টি দল করে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—বিশ্বের জনপ্রিয় এই খেলা, যা ১৯০০ সালে অলিম্পিক মঞ্চে শেষবার দেখা গিয়েছিল, তার ফিরে আসা বাংলাদেশের জন্য কীভাবে ইতিহাস তৈরি করতে পারে?

ক্রিকেটের অলিম্পিকে ফিরে আসা: ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

ক্রিকেটের অলিম্পিকে ফিরে আসার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চলছিল। ১৯০০ সালে একমাত্র অলিম্পিকে ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে গ্রেট ব্রিটেন সোনা এবং ফ্রেঞ্চ এথলেটিক ক্লাব ইউনিয়ন রৌপ্য পদক জয় করে। এরপর, ১৯৮৬ সালে অ্যাথেন্স অলিম্পিকের জন্য ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা হলেও তা পরিত্যক্ত হয়।

এবার, ২০২৮ সালের অলিম্পিকে ক্রিকেট ফিরতে যাচ্ছে, এবং এতে থাকবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট। ৬টি দেশ পুরুষ ও ৬টি দেশ মহিলা বিভাগে অংশ নেবে। প্রতিটি দলে সর্বোচ্চ ১৫ জন খেলোয়াড় থাকতে পারবেন।

ক্রিকেটের যোগ্যতা অর্জন: কাদের সুযোগ থাকবে?

আইসিসির অধীনে ১২টি পূর্ণ সদস্য দেশ রয়েছে এবং ৯০টিরও বেশি দেশ সহযোগী সদস্য হিসেবে ক্রিকেটে অংশ নেয়। তবে আয়োজক দেশ হিসেবে আমেরিকা সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করবে। বাকি দেশগুলোকে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে যোগ্যতা নির্ধারণ হতে পারে। বর্তমানে, ভারতের মতো শক্তিশালী দল, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা ছয়ে রয়েছে। পাকিস্তান ৭ নম্বরে এবং বাংলাদেশ ৯ নম্বরে অবস্থান করছে। যদিও র‌্যাঙ্কিংয়ের মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে, তবে বাংলাদেশের জন্য সুযোগ তৈরি হতে পারে যদি তারা নিজের উন্নতি অব্যাহত রাখতে পারে।

বাংলাদেশের সম্ভাবনা: সুযোগ কি সত্যিই আসবে?

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা সময়ে চলেছে। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল এবং মাহমুদউল্লাহদের মতো খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তবে অলিম্পিকে জায়গা পেতে হলে এখনও অনেক কিছু করতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য এই সুযোগটি এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়ার মঞ্চে জায়গা পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেটের আরও বিস্তার হতে পারে। বিশেষ করে, যদি বাংলাদেশ দল তাদের শক্তির পুরোটা কাজে লাগাতে পারে, তবে অলিম্পিকে অংশগ্রহণ তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স: উন্নতির পথে

বাংলাদেশের বর্তমান ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়মিত সাফল্য পেয়েছে, এবং তাদের শক্তি বেড়েছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তারা বেশ প্রতিযোগিতামূলক। যদি তারা আরও দৃঢ়ভাবে নিজেদের প্রস্তুতি নিতেই থাকে, তবে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। কেবল বাংলাদেশ নয়, আইসিসি এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখলে, এটি ক্রিকেটের বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন যুগ শুরু হতে পারে।

এটি কিভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে?

অলিম্পিকে ক্রিকেট ফিরে আসার পর, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য তা এক বিশাল সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশ্ব ক্রিকেটের গঠন পরিবর্তন হতে পারে এবং অলিম্পিকের মতো বৃহৎ মঞ্চে বাংলাদেশের উপস্থিতি দেশের তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। কেবল ক্রিকেটের জন্যই নয়, এটি বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে পারে।

অলিম্পিকের নতুন দিগন্ত

যদিও বাংলাদেশের জন্য এখনও কিছুটা কঠিন, তবে সঠিক পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা অলিম্পিকের মঞ্চে জায়গা করতে পারে। বিশ্বের শীর্ষ ক্রিকেট পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, তারা নিজেদের কৃতিত্ব প্রমাণ করতে পারে। অলিম্পিকে ক্রিকেট ফিরে আসার এই যাত্রা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এক নতুন এবং উজ্জ্বল সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।

এখন শুধু দরকার শক্তি, ধৈর্য, এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে বিশ্ব মঞ্চে প্রমাণ করা।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ