ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

নামাজের পরের তিন গুরুত্বপূর্ণ আমল: জান্নাত লাভের সহজ উপায়

২০২৫ এপ্রিল ০৯ ১৬:৩০:০২
নামাজের পরের তিন গুরুত্বপূর্ণ আমল: জান্নাত লাভের সহজ উপায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: নামাজের পর কিছু নির্দিষ্ট আমল রয়েছে, যা নিয়মিত করলে একজন মুসলমান আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারেন এবং জান্নাতের পথ সুগম হয়ে যায়। প্রতিটি ফরজ নামাজের পর তিনটি আমল করা খুবই ফজিলতপূর্ণ ও বরকতময়। হাদিসে এ আমলগুলোর ব্যাপারে স্পষ্টভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।

১. আয়াতুল কুরসি পাঠ

প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হজরত আবু উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—“যে ব্যক্তি প্রতিটি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।”— (নাসাঈ: ৯৪৪৮, তাবারানি: ৭৮৩২)

আয়াতুল কুরসির বাংলা অর্থ:

আল্লাহ, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সমস্ত সৃষ্টির ধারক ও সংরক্ষক। তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে গ্রাস করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সব তাঁরই। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে? তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে ও পেছনে রয়েছে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, শুধু তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ছাড়া। তাঁর কুরসি আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টন করে আছে। এগুলোর সংরক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ, মহান।

২. ৩৩ বার করে তাসবিহ, তাহমিদ ও তাকবির পাঠ

নামাজের পর ৩৩ বার করে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’ বলা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এতে আমলের পাল্লা ভারী হয় এবং জিহাদের সওয়াব লাভ হয়।

হাদিসে বলা হয়েছে:

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, দরিদ্র সাহাবিরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে অভিযোগ করেন, ধনীরা তাদের দান, হজ, ওমরা ও জিহাদের মাধ্যমে অগ্রগামী হয়ে গেছেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন—

“আমি কি তোমাদের এমন কিছু আমলের কথা বলব, যা করলে তোমরা তাদের সমকক্ষ হতে পারো এবং কেউ তোমাদের ছাড়া এগিয়ে যেতে পারবে না?”তিনি বলেন, “প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার করে সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করো।”— (বুখারি: ৮৪৩)

এভাবে মোট ৯৯ বার জিকির করা হয়। কেউ চাইলে শেষে "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু..." বলে শততম পূর্ণ করতে পারেন।

৩. কালিমা শাহাদাত পাঠ

নামাজের পর কালিমা শাহাদাত পাঠ করা একজন মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে বলা হয়েছে, নিয়মিত শাহাদাত পাঠ করলে কিয়ামতের দিন মুক্তির সুযোগ পাওয়া যাবে।

কালিমা শাহাদাতের বাংলা অর্থ:

আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর প্রেরিত বান্দা ও রাসূল।

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পর এই তিনটি আমল করা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু এর সওয়াব ও গুরুত্ব অপরিসীম। আয়াতুল কুরসি পাঠ, ৩৩ বার করে জিকির এবং কালিমা শাহাদাত পাঠ—এই তিন আমল মুমিনের জান্নাতের পথ প্রশস্ত করে দেয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম উপায়।

আপনি যদি এই আমলগুলো নিয়মিত করেন, ইনশাআল্লাহ আপনি দুনিয়া ও আখেরাতে উপকৃত হবেন।

সাবরিনা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ