ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

তেলের দাম কমেছে বিশ্ববাজারে, বাংলাদেশের জন্য কী সুফল

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ০৮ ১০:৪৫:৫৪
তেলের দাম কমেছে বিশ্ববাজারে, বাংলাদেশের জন্য কী সুফল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ববাজারে তেলের দাম গত কয়েক সপ্তাহে ক্রমাগত কমতে থাকায় বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবর্তনে, গত ৪ বছরে সর্বনিম্ন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে তেলের দাম। তবে, সস্তা তেল এখনই ভোক্তার কাছে পৌঁছায়নি, আর এর সুফল কবে আসবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার পেছনে কী কারণ?

২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বর্তমানে প্রতি ব্যারেল প্রায় ৬০ ডলার। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন তেলের দাম ছিল ১৩৯ ডলার পর্যন্ত। তবে যুদ্ধের পর দাম কমে ৮০ ডলারে আসে এবং ২০২৪ সালে এটি ৬০ ডলারে চলে আসে।

বাংলাদেশের জন্য কী সুফল?

বাংলাদেশ প্রতিদিন ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টন তেল আমদানি করে, এর মধ্যে প্রায় ৪৬ লাখ টন ডিজেল। ডিজেল বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প ও পরিবহন খাতে প্রধান জ্বালানি। তাই তেলের দাম কমলে পণ্যের দামও কমার সম্ভাবনা থাকে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জীবনযাত্রার ব্যয়ে। তবে, এখনো বাংলাদেশে তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেনি।

কেন দাম কমছে না এখনই?

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জানাচ্ছে, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও এর প্রভাব তৎক্ষণাৎ দেশে পড়ছে না। কারণ, তেল দেশে পৌঁছাতে এক মাসের বেশি সময় লাগে এবং তেলের দাম নির্ধারণে ডলারের মূল্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গত ২ বছর ধরে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তেলের দাম প্রতি মাসে আপডেট করা হচ্ছে। তবে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে তেলের দাম আগের পর্যায়ে ফিরে আসা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশে তেল আমদানির সক্ষমতা কতটুকু?

বাংলাদেশের একমাত্র তেল শোধনাগারের সক্ষমতা সীমিত হওয়ায়, কম দামে অপরিশোধিত তেল আমদানি করা সম্ভব নয়। এই শোধনাগার ১৯৬৮ সালে নির্মিত হলেও, দেশের তেল পরিশোধনাগারের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, বিপিসিকে বেশি দাম দিয়ে পরিশোধিত তেল আমদানি করতে হয়।

যতটুকু সম্ভব তেলের দাম কমানোর সুযোগ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে গেলেও বাংলাদেশ সরকার যদি দ্রুত দাম সমন্বয় করে, তাহলে উৎপাদন ও পরিবহন খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো সম্ভব হবে এবং দেশের অর্থনীতির উপর চাপ কমবে।

সম্ভাবনা কী?

বিশ্ববাজারের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আগামী কয়েক মাসে তেলের দাম আরও কমবে। তেলের দাম কমলে বাংলাদেশে কৃষি, শিল্প ও পরিবহন খাতের উন্নতি হতে পারে, যা ভোক্তার জন্য সুখবর। তবে, সময়ের সাথে দাম কতটা কমবে, সেটি নির্ভর করবে সরকারের মূল্য নির্ধারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতির ওপর।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে, এবং বাংলাদেশও এই সুবিধা পেতে পারে। তবে, এখন পর্যন্ত তেলের দাম কমেনি যথেষ্ট পরিমাণে। এই সুযোগগুলো ঠিকমতো কাজে লাগাতে হলে সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন সাধারণ মানুষও তার সুফল পায়।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ