ঢাকা, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১

গাজায় রক্তঝরা মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের তীব্র নিন্দা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ০৭ ১৬:৫৫:৫৯
গাজায় রক্তঝরা মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের তীব্র নিন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, ৮ এপ্রিল ২০২৫ — আগুন-রক্ত আর ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজা উপত্যকায় যখন প্রতিনিয়ত ঝরছে শিশুদের কান্না আর মায়েদের আর্তনাদ, তখন সেই নির্মম মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে জোরালো কণ্ঠে প্রতিবাদ জানালো বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা।

সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক গভীর উদ্বেগপূর্ণ বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জানানো হয় — ‘এটি নিছক যুদ্ধ নয়, এটি একপাক্ষিক নিষ্ঠুর নিধনযজ্ঞ।’

বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘনের পর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু — যারা যুদ্ধ নয়, চেয়েছিল শান্তি ও নিরাপত্তা। সহিংসতার এ ধারা বন্ধ না হওয়ায় গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোও বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে পুরো অঞ্চল আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানায়, ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের এই ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বিশ্বের বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকাগুলোতে নির্বিচারে বোমা বর্ষণ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে এসব সামরিক অভিযান বন্ধে ইসরায়েলকে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ, একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালনেরও তাগিদ দেয়।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েল বারবার আন্তর্জাতিক আহ্বান ও মানবিক আবেদন উপেক্ষা করে চলেছে, যা আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার জন্য ভয়াবহ হুমকি। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে— তারা যেন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে, বেসামরিক জনগণের জীবন রক্ষায় অগ্রাধিকার দেয় এবং অবরুদ্ধ গাজায় জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ সরকার তার দীর্ঘদিনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে — ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি রয়েছে বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন।

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আলোচনার টেবিলে ফেরা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, কূটনীতি ও সংলাপই হতে পারে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানের পথ। সেই লক্ষ্যেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ ও মানবিকভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশের এই বিবৃতি শুধু একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিক্রিয়া নয় — এটি নিপীড়িত মানুষের পক্ষে এক প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর, এক ন্যায়ের দাবি, এক মানবিক আবেদন।

ফারুক/

জাতীয় - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ