ঢাকা, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩১

MD. Razib Ali

Senior Reporter

৮ লাখ শ্রমিক চাকরি হারাতে পারেন! যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭% শুল্কে টালমাটাল গার্মেন্টস শিল্প

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ০৬ ২৩:৪৫:০৪
৮ লাখ শ্রমিক চাকরি হারাতে পারেন! যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭% শুল্কে টালমাটাল গার্মেন্টস শিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৭% আমদানি শুল্ক কার্যকর হলে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাত। বছরে ৮৪০ কোটি ডলার রপ্তানির ঝুঁকিতে পড়বে এবং লাখো শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ডে শুল্কের ছুরিকাঘাত?

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প কেবল একটি রপ্তানি খাত নয়—এটি লক্ষ শ্রমিকের জীবনের অবলম্বন, দেশের অর্থনীতির প্রাণ। আর এই খাতই আজ হুমকির মুখে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের পোশাক শিল্পে বিশাল ধাক্কা আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

শুল্ক বাড়লে পোশাকের দামও বাড়বে, রপ্তানি কমবে

একটি সাধারণ উদাহরণেই পরিষ্কার—একটি ১০ ডলারের শার্টে আগে যেখানে ১৬% শুল্ক থাকতো, সেখানে এখন লাগবে ৩৭%। অর্থাৎ, আগে যেখানে খরচ হতো ১১.৬০ ডলার, এখন তা বেড়ে দাঁড়াবে ১৩.৭০ ডলার। এর ফলে মার্কিন ক্রেতারা বিকল্প দেশ খুঁজতে পারেন এবং রপ্তানি কমে যেতে পারে প্রায় ২০-৩০ শতাংশ।

সম্ভাব্য ক্ষতি:

বছরে ১৪৭ কোটি থেকে ২২০ কোটি ডলার

রপ্তানি হ্রাসে কারখানা বন্ধের ঝুঁকি

দাম কমাতে চাপ আসবে ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষ থেকে

ভারত-পাকিস্তান সস্তায় দিচ্ছে, বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে!

মজার বিষয় হলো, ভারতের উপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২৬% এবং পাকিস্তানের জন্য তা ২৯%। অর্থাৎ, তারা তুলনামূলকভাবে ৯ থেকে ১১ শতাংশ কম দামে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। ফলে গ্যাপ, লিভাইসসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের জায়গা থেকে সরতে পারে।

৮-১২ লাখ শ্রমিক চাকরি হারাতে পারেন!

এই শুল্ক বাড়ার সরাসরি প্রভাব পড়বে গার্মেন্টস কারখানাগুলোর উপর। অর্ডার কমলে, উৎপাদন কমবে। উৎপাদন কমলে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে।বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৮ থেকে ১২ লাখ শ্রমিক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এতে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সমাধান কোথায়? আলোচনায় আশার আলো আছে কি?

বর্তমানে প্রয়োজন বুদ্ধিদীপ্ত কূটনৈতিক কৌশল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কার্যকর আলোচনা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে (EPB) অবশ্যই সক্রিয় হতে হবে।

অন্যদিকে, আমাদের গার্মেন্টস খাতকে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে—এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যের দিকেও নজর দিতে হবে।

এই মুহূর্তে ৩৭% শুল্ক শুধু একটি অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি বাংলাদেশের প্রস্তুতি, কূটনীতি ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কৌশলের বড় পরীক্ষা।

এই খাতের টিকে থাকা মানে দেশের অর্থনীতির সচল থাকা। তাই সময় এসেছে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার—দেশীয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গার্মেন্টস খাতকে বাঁচিয়ে রাখার।

মো: রাজিব আলী/

জাতীয় - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ