ঢাকা, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

জেনেনিন ঈদের রাতের গুরুত্বপূর্ণ আমল

২০২৫ মার্চ ৩০ ১৯:১৫:৩২
জেনেনিন ঈদের রাতের গুরুত্বপূর্ণ আমল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। এক মাস রমজানের সিয়াম সাধনার পর ঈদ আসে এক পরিশুদ্ধ আত্মার অনুভূতি নিয়ে। এটি শুধু উৎসব নয়, বরং ত্যাগ, সংযম ও ইবাদতের পুরস্কার স্বরূপ পাওয়া একটি বিশেষ দিন। ঈদের দিনের মতো ঈদের আগের রাতও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। এই রাতের কিছু বিশেষ আমল রয়েছে, যা পালন করলে আল্লাহর অশেষ রহমত লাভ করা যায়।

সদকাতুল ফিতর আদায়: রোজার পূর্ণতার এক অংশ

রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো সদকাতুল ফিতর আদায় করা। এটি মূলত রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। নামাজে ত্রুটি হলে যেমন সিজদায়ে সাহু তা পূরণ করে, ঠিক তেমনই সদকাতুল ফিতর রোজার ত্রুটিগুলো শোধরানোর সুযোগ করে দেয়।

হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক রোজাদারের জন্য সদকাতুল ফিতর দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন। এটি রোজাদারের অনর্থক ও অশ্লীল কথাবার্তা পরিশুদ্ধ করার জন্য এবং অভাবী মানুষদের জন্য আহারের ব্যবস্থা হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬০৯)

নতুন চাঁদ দেখা ও দোয়া পাঠ করা

শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখা সুন্নত এবং এই সময় দোয়া পাঠ করাও গুরুত্বপূর্ণ। নবী করিম (সা.) চাঁদ দেখার পর নিম্নোক্ত দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ:আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল য়ুমনি ওয়াল ঈমান, ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম; রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।

(তিরমিজি, হাদিস : ৩৫২৬)

এই দোয়া পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা বরকতময় নতুন মাস দান করেন এবং ঈদের দিনটি শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণময় হয়ে ওঠে।

ঈদের রাতে নফল ইবাদত: অনন্য ফজিলত

ঈদের রাতকে শুধু আনন্দ উদযাপনের সময় হিসেবে ভাবলে চলবে না। বরং এই রাত ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটানো সুন্নত এবং অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুই ঈদের রাত জেগে ইবাদত করবে, কিয়ামতের কঠিন দিনে তার অন্তর মৃত হবে না, যেদিন মানুষের হৃদয় ভয় ও বিভীষিকায় ভীত হয়ে পড়বে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৮২)

ঈদের রাতের করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল

১. নফল নামাজ আদায়: ঈদের রাতে Tahajjud, Nafl ইবাদত ও বিশেষ দোয়া করা যেতে পারে।

২. কুরআন তিলাওয়াত: এই রাতে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা উচিত।

৩. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা: পবিত্র রমজানের পরও যদি কোনো ভুল থেকে থাকে, তাহলে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করা উচিত।

৪. পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দোয়া: পরিবারের সবার কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা যেতে পারে।

৫. অসহায়দের সাহায্য করা: যাদের ঈদ উদযাপনের সামর্থ্য নেই, তাদের পাশে দাঁড়ানো অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত।

ঈদের রাত কেবল আনন্দ বা উৎসবের রাত নয়, এটি ইবাদতের রাতও বটে। এই রাতে আল্লাহর রহমত লাভের অপার সুযোগ রয়েছে। সদকাতুল ফিতর আদায়, নতুন চাঁদ দেখে দোয়া পাঠ, নফল ইবাদত ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আমরা এই রাতকে আরও অর্থবহ করে তুলতে পারি। ঈদের রাতকে ইবাদতে কাটিয়ে আমরা যেন আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি—এটাই হোক আমাদের প্রার্থনা।

সামিরা বিনতে সাবা/

ধর্ম - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ