ঢাকা, রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

লভ্যাংশ ঘোষণা পর শেয়ারদামে উত্থান

২০২৫ মার্চ ২৬ ১৪:৫৫:৪৬
লভ্যাংশ ঘোষণা পর শেয়ারদামে উত্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন বছর পর বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় সুখবর নিয়ে এল ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ব্যাংকটি ঘোষণা করেছে ৩৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড, যার মধ্যে ১৭.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ১৭.৫০ শতাংশ বোনাস অন্তর্ভুক্ত। দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীল ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত এই ব্যাংকটি এবার সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড দেওয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।

মুনাফায় ইতিবাচক ধারা, ইপিএস-এর উত্থান

২০২৪ অর্থবছরে ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৮৬ পয়সায়, যা আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে (২০২৩ সালে ছিল ৪ টাকা ৫১ পয়সা)। ধারাবাহিক উন্নতির ফলে এবার কোম্পানিটি আগের তিন বছরের তুলনায় বেশি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করল।

ডিভিডেন্ডের ধারাবাহিকতা ও অতীত পর্যালোচনা

ব্যাংকটি সর্বশেষ ২০২০ সালে ৩৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল, যার মধ্যে ১৭.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ১৭.৫০ শতাংশ বোনাস ছিল। তবে এরপর টানা তিন বছর, ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ২৫ শতাংশ হারে ডিভিডেন্ড প্রদান করেছে (১২.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ১২.৫০ শতাংশ বোনাস)। এবার তিন বছর পর ফের ৩৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় বিনিয়োগকারীরা আশার আলো দেখছেন।

শেয়ারদামের প্রতিক্রিয়া

ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারদাম সামান্য উত্থান দেখেছে। আগের দিনের ২৬ টাকার তুলনায় শেয়ারটি বন্ধ হয়েছে ২৬ টাকা ৫০ পয়সায়, মাত্র ৫০ পয়সার পার্থক্য! তিন বছর পর সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড ঘোষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ খবরের পরও শেয়ারদামে বড় কোনো লাফ না আসায় বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হতাশ।

বিনিয়োগকারীদের মতামত: বড় কোম্পানি, কম আগ্রহ!

বিনিয়োগকারীরা হতাশা প্রকাশ করে বলছেন, এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা বছরের পর বছর কোনো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না, এমনকি লোকসানে চলছে, অথচ তাদের শেয়ারের দাম ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হচ্ছে! এর বিপরীতে, ইস্টার্ন ব্যাংকের মতো লাভজনক ও ধারাবাহিকভাবে ডিভিডেন্ড প্রদানকারী কোম্পানির শেয়ার ৩০ টাকাও ছুঁতে পারছে না।

তাদের মতে, এর মূল কারণ হচ্ছে, বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারে গ্যাম্বলিং করা যায় না। এছাড়া ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম। উপরন্তু, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এই খাতে সক্রিয় নয়, যা ব্যাংকিং শেয়ারের চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে এবং দামে স্থবিরতা তৈরি করছে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইস্টার্ন ব্যাংকের ধারাবাহিক মুনাফা বৃদ্ধির ধারা এবং রেকর্ড ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদে আস্থা বাড়াতে পারে। যদিও স্বল্পমেয়াদে শেয়ারদামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি, তবে ভবিষ্যতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তা বাড়লে ব্যাংক খাতের শেয়ারের বাজার মূল্য পুনরুদ্ধার হতে পারে।

মো: রাজিব আলী/

শেয়ার নিউজ - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ