ঢাকা, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১

যক্ষ্মা রোগীদের খাদ্যাভ্যাস, যেগুলো খেলে বাড়বে বিপদ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ২৬ ১১:৫২:২৪
যক্ষ্মা রোগীদের খাদ্যাভ্যাস, যেগুলো খেলে বাড়বে বিপদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যক্ষ্মা (টিবি) একটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রামক রোগ, যা মূলত ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। এটি শরীরের জন্য বড় ধরনের লড়াই হয়ে দাঁড়ায়, যেখানে শুধু ওষুধই যথেষ্ট নয়, পুষ্টিকর খাবারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য অপরিহার্য। তাই যক্ষ্মারোগীদের জন্য উপযোগী খাবার নির্বাচন করা এবং ক্ষতিকর খাবার এড়িয়ে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যক্ষ্মারোগীদের জন্য পুষ্টিকর খাবার

যক্ষ্মারোগীরা সুস্থ থাকার জন্য উচ্চ প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা রোগীদের দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে:

প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার:

প্রোটিন শরীরের কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যক্ষ্মারোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো:

চর্বিহীন মাংস (মুরগি, টার্কি, মাছ)

ডাল (মসুর, মটরশুঁটি, ছোলা)

ডিম

দুগ্ধজাত পণ্য (কম চর্বিযুক্ত দুধ, দই, পনির)

বাদাম ও বীজ

ফল এবং শাকসবজি:

ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল ও সবজি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ কারণে যক্ষ্মারোগীদের নিম্নলিখিত খাবারগুলো খাওয়া উচিত:

পাতাযুক্ত সবুজ শাক (পালং শাক, পুঁইশাক, মেথি)

সাইট্রাস ফল (কমলা, জাম্বুরা, লেবু)

বেরি জাতীয় ফল (ব্লুবেরি, রাস্পবেরি, স্ট্রবেরি)

মিষ্টি আলু

গাজর

শস্যদানা:

শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগানোর ক্ষেত্রে শস্যজাতীয় খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যক্ষ্মারোগীদের জন্য ভালো শস্যদানা খাবারের মধ্যে রয়েছে:

বাদামি ভাত

গমের রুটি ও পাস্তা

ওটস

স্বাস্থ্যকর চর্বি:

ভালো চর্বি শরীরের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করে ও শক্তি যোগায়। এসব চর্বি পাওয়া যায়:

চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন, সার্ডিন)

বাদাম ও বীজ

তরল:

যক্ষ্মারোগীদের শরীর আর্দ্র রাখা খুব জরুরি। পানির পাশাপাশি নিম্নলিখিত তরল গ্রহণ করা উপকারী:

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি

ভেষজ চা

স্যুপ (সবজি, মুরগির মাংস বা হাড়ের ঝোল)

যক্ষ্মারোগে এড়িয়ে চলা উচিত যেসব খাবার

যক্ষ্মারোগীদের কিছু বিশেষ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এসব খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করতে পারে ও ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। নিচে এ ধরনের কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:

প্রক্রিয়াজাত ও উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার: ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত পনির

তেলেভাজা খাবার: পুরি, পরোটা, সমুচা

বেকড পণ্য: কুকিজ, কেক, পেস্ট্রি

চিনিযুক্ত পানীয় ও স্ন্যাকস: কোল্ড ড্রিংক, ক্যান্ডি

প্রক্রিয়াজাত মাংস: বেকন, সসেজ

অ্যালকোহল: ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে

ক্যাফেইন: চা ও কফির অতিরিক্ত গ্রহণ ক্ষতিকর হতে পারে

কাঁচা বা কম রান্না করা খাবার: পাস্তুরাইজড নয় এমন দুগ্ধজাত পণ্য, অপরিচ্ছন্ন কাঁচা সবজি

যক্ষ্মা রোগ থেকে দ্রুত সুস্থ হতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য। পুষ্টিকর খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ায়, ফলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব হয়। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার রাখা এবং অস্বাস্থ্যকর ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

সঠিক খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি।

মোঃ আশিক/

স্বাস্থ্য - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ