ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

না খেয়ে রোজা রাখা নিয়ে ইসলামি ব্যাখ্যা

২০২৫ মার্চ ২৫ ১৮:২৯:০২
না খেয়ে রোজা রাখা নিয়ে ইসলামি ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান মাসের রোজা শুধু আল্লাহর আদেশ অনুসরণ করার একটি ইবাদত নয়, বরং এটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছে ইসলাম। রোজার উদ্দেশ্য মানুষের আত্মিক উন্নতি হলেও, এটি মানবদেহের স্বাস্থ্যকেও মাথায় রেখেছে। ইসলাম কঠিন কিছু করতে চাইছে না, বরং সহজ উপায়ে রোজা পালন করতে আহ্বান করেছে, যাতে শরীর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আল্লাহ নিজেই কোরআনে বলেছেন, "আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না" (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)।

রমজান মাসের রোজায় যেহেতু শারীরিকভাবে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে, তাই ইসলাম সাহাবাদের জন্য স্বাস্থ্য রক্ষা বিষয়েও বিশেষ দিকনির্দেশনা দিয়েছে। যেমন, ইসলামে লাগাতার না খেয়ে রোজা রাখা নিষিদ্ধ। হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবাদের সাওমে বিসাল বা লাগাতার না খেয়ে রোজা রাখার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। একবার কিছু সাহাবি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুকরণে এটি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত রোজা শেষ করতে ঈদের চাঁদ ওঠার পর রসুলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে ধমক দিয়ে বললেন, "যদি চাঁদ না উঠত, আমি আরও দীর্ঘ করতাম" (মুসলিম, হাদিস: ১১০৩)।

এছাড়া রোজার সময় সাহির খাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাহির খাওয়া শুধু শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নয়, বরং এটি একটি ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "তোমরা সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে দিনে রোজা রাখার জন্য সাহায্য গ্রহণ করো" (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৬৯৩)। এর মাধ্যমে দিনের রোজা পালন এবং রাতে ইবাদতের জন্য শক্তি পাওয়া যায়। এমনকি রসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের এক ঢোক পানি দিয়েও সাহির খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৩৪৭৬)।

স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে রোজার পর দ্রুত ইফতার করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবিরা সবার আগে দ্রুত ইফতার করতেন এবং সেহরি কিছুটা দেরিতে করতেন, যাতে পুরো রোজার সময় শরীর শক্তিশালী থাকে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৫৯১)

রমজান মাসের এই রোজা শুধু আত্মিক উন্নতি নয়, স্বাস্থ্য রক্ষায়ও সহায়ক। আমাদের সকলকে এই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, যাতে রোজার মাধ্যমে আমরা শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়া এই রোজাগুলি কবুল হয়।

আল্লাহ আমাদের সকলকে এই মহিমান্বিত মাসে সঠিকভাবে রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ইবনে বিনতে সাবা/

ধর্ম - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ