শবে কদর: কেন অনির্দিষ্ট রাখা হয়েছে তার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত

নিজস্ব প্রতিবেদক: শবে কদর, মুসলিমদের জন্য এক অতি পুণ্যময় রাত, যার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, নবীজি (সা.) শবে কদর সম্পর্কে বলেছেন যে, এটি রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিতে—২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখে অথবা রমজানের শেষ রাতে ঘটতে পারে। এই রাতে ঈমানের সঙ্গে ইবাদত করলে, আল্লাহ তা'আলা তার অতীত গুনাহ মাফ করে দেন। তবে শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখের ব্যাপারে পরিস্কারভাবে কিছু বলা হয়নি, কেননা এর বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে।
শবে কদরের আলামত
এ রাতের কিছু আলামত রয়েছে, যা এ রাতটি অন্যান্য রাত থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.)-এর বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, শবে কদর রাতটি হবে নির্মল, ঝলমলে এবং তাপমাত্রা হবে মাঝারি—নগরম, না ঠাণ্ডা। রাতটি এমনভাবে আলোকিত হবে, যেন আকাশে চাঁদের মতো নূর ছড়ানো রয়েছে। এ রাতে তারকারা সরে যায় না এবং পরদিন সূর্য এমনভাবে উদিত হবে, যেন পূর্ণিমার চাঁদ। সূর্যের কিরণও থাকবে না, আর শয়তানও সে দিনের সূর্যোদয়ের সাথে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে না। (দূররে মানসূর: আহমদ ও বায়হাকি)
শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখের অনুপস্থিতি
রাসুল (সা.) একদিন সাহাবিদের শবে কদরের তারিখ জানাতে বের হয়েছিলেন, কিন্তু দুই মুসলিমের ঝগড়ার কারণে তিনি তা জানাতে পারেননি। তিনি বলেছিলেন, "আমি তোমাদেরকে শবে কদরের তারিখ জানাতে এসেছিলাম, কিন্তু অমুক অমুক ঝগড়ার কারণে তা ভুলে গেছি।" এরপর তিনি বললেন, "তোমরা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে শবে কদর খোঁজো।" (বুখারি, হাদিস: ১৮৮১)
এ হাদিস থেকে স্পষ্ট হয় যে, পরস্পরের দ্বন্দ্ব ও ঝগড়া-ঝাটি আল্লাহর রহমত থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে। শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি, কারণ এই রাতের ফজিলত লাভের জন্য মানুষের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শবে কদরের অনির্দিষ্টতা: উপকারিতা
শবে কদরের তারিখ অনির্দিষ্ট রাখারও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা রয়েছে:
১. ইবাদতের গুরুত্ব বাড়ানো: যদি শবে কদরের তারিখ নির্দিষ্ট থাকতো, তবে মানুষ শুধু ওই রাতেই ইবাদত করত, অন্য রাতে চেষ্টা কম হত। কিন্তু এখন যেহেতু তারিখ অনির্দিষ্ট, তাই মুসলিমরা রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি রাতে ইবাদত করার জন্য সচেষ্ট থাকে, যার ফলে তাদের প্রতি রাতের ইবাদতও সওয়াবের অধিকারী হয়।
২. গুনাহ থেকে মুক্তি: কিছু মানুষ, যাদের গুনাহ হয়ে থাকে, শবে কদরের রাতটি জানলেও তা ভুলে গিয়ে গুনাহ করতো। তবে, এই অনির্দিষ্টতার কারণে মানুষ তার গুনাহ মাফ করার জন্য প্রতিটি রাতেই ইবাদত করে, যা তাদের জন্য বরকত নিয়ে আসে।
৩. আত্মবিশ্বাস এবং আশা: যদি শবে কদর নির্দিষ্ট থাকতো, তবে যাদের ওই রাতে ইবাদত করা সম্ভব না হতো, তারা হতাশ হয়ে যেত। কিন্তু এখন তারা জানে যে, শবে কদরের ফজিলত অর্জন করতে প্রতিটি রাতেই ইবাদত করার সুযোগ রয়েছে। এর ফলে, তাদের ইবাদতের প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় বাড়ে।
শবে কদরের রাতের রহমত ও ফজিলত লাভের জন্য আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উপর। শবে কদর অনির্দিষ্ট রাখার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শেখাতে চেয়েছেন যে, প্রতিটি মুহূর্তের গুরুত্ব থাকতে পারে যদি তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়। তাই, প্রতিটি রাতেই ইবাদত এবং দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত কামনা করা উচিত, কারণ আল্লাহ তাআলা খাঁটি নিয়ত এবং আন্তরিক ইবাদতকে পুরস্কৃত করেন।
ইবনে বিনতে সাবা/
ধর্ম - এর সব খবর
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেষ হলো ব্রাজিল বনাম কলম্বিয়ার মধ্যকার ম্যাচ
- শেষ হলো আর্জেন্টিনা বনাম উরুগুয়ের মধ্যকার ম্যাচ
- ব্রাজিল বনাম কলম্বিয়া: হাইভোল্টেজ লড়াইয়ের পরিসংখ্যান ও সম্ভাব্য একাদশ
- ম্যাচ হারার পর মুস্তাফিজকে নেয়ার বিষয়ে যা বললেন কলকাতার অধিনায়ক রাহানে
- অ্যাম্বুলেন্স চালকের অছিলায় বাঁচলো তামিমের জীবন
- নেশনস লিগ: শেষ হলো ফ্রান্স বনাম ক্রোয়েশিয়ার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ
- সেহরিতে যেসব খাবার আমাদের জন্য উপকার
- উরুগুয়ে বনাম আর্জেন্টিনা: লাইভ স্ট্রিম, টিভি, দলীয় খবর ও সেরা একাদশ
- শেয়ারবাজারের নতুন নিয়ম করলো বিএসইসি
- সেনাসদরের সাফ বক্তব্য: হাসনাতের "রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র" সম্পর্কে স্পষ্টতা
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার (১৯ মার্চ ২০২৫)
- মুখ দিয়ে ফেনা, ছিল না পালস, মৃত্যুর মুখ থেকে যেভাবে ফিরে এলেন তামিম
- তামিমের আজ এই অবস্থার জন্য দায়ি বিসিবি
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার (২১ মার্চ ২০২৫)
- অবশেষে মুখ খুললেন সেনাপ্রধান