ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

শেয়ারবাজারের নতুন নিয়ম করলো বিএসইসি

২০২৫ মার্চ ২৫ ০৯:২৪:১৪
শেয়ারবাজারের নতুন নিয়ম করলো বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য নতুন একটি সুপারিশ এসেছে। যেসব কোম্পানি ব্যাংক থেকে এক হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ গ্রহণ করবে, তাদের জন্য শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গঠিত পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স।

শেয়ারবাজারে প্রবেশের নতুন নিয়ম

টাস্কফোর্সের প্রস্তাব অনুসারে, যে কোম্পানিগুলো স্থিরমূল্য পদ্ধতিতে ৩০ কোটি টাকার কম এবং বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৫০ কোটি টাকার কম মূলধন নিয়ে বাজারে আসতে চায়, তাদের তালিকাভুক্তি বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫০% এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫০% শেয়ার সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নির্দিষ্ট ৫% এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য ৪৫% শেয়ার বরাদ্দ থাকবে।

আইপিও অনুমোদন: স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষমতা বৃদ্ধি

টাস্কফোর্সের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনের প্রাথমিক ক্ষমতা স্টক এক্সচেঞ্জের হাতে তুলে দেওয়া। স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলোর আইপিও আবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে, প্রয়োজনে তাদের ব্যবসা ও কারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করবে, এবং এরপরই অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে। স্টক এক্সচেঞ্জ যদি কোনো কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করে, তবে বিএসইসি সেটি অনুমোদন করতে পারবে না।

নিয়ন্ত্রিত সময়সীমার মধ্যে আইপিও অনুমোদন

আইপিও আবেদন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পুরো প্রক্রিয়া ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। স্থিরমূল্য পদ্ধতিতে এই সময়সীমা হবে সাড়ে পাঁচ মাস, আর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ ছয় থেকে সাড়ে ছয় মাস।

নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি

আইপিও আবেদনকারী কোম্পানির আর্থিক অবস্থার নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স। বিএসইসি অনুমোদিত অডিটর প্যানেল এই কাজ পরিচালনা করবে। এছাড়া, শেয়ারবাজারে কারসাজি ও অনিয়ম প্রতিরোধে নতুন বিধিমালা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে।

পুঁজিবাজার সংস্কারের আরও কিছু উদ্যোগ

পুঁজিবাজার সংস্কারকে ত্বরান্বিত করতে টাস্কফোর্স বেশ কিছু সুপারিশ করেছে:

দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের পরিবর্তে পুঁজিবাজারকে উৎসাহিত করা।

শেয়ারবাজারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে কঠোর শাস্তির বিধান প্রবর্তন।

ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএলসহ অন্যান্য বাজার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা।

পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ

টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে বিএসইসিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কিত সুপারিশ, শেয়ারের বিপরীতে ঋণসুবিধার বিধিমালা সংশোধন এবং সর্বশেষ আইপিও সংক্রান্ত সুপারিশ।

এই সংস্কার উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী হবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শেয়ার নিউজ - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ