ঢাকা, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

শেয়ারবাজারে ১০ কোম্পানির পতন, ‘ফকির’ বিনিয়োগকারীরা

২০২৫ মার্চ ২২ ১২:২৫:৫৩
শেয়ারবাজারে ১০ কোম্পানির পতন, ‘ফকির’ বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে একেবারে শূন্যের কোটায় পৌঁছেছে ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। যারা এই শেয়ারের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য বদলানোর আশা করেছিলেন, তাদের জন্য বাস্তবতা হয়েছে একেবারে অন্যরকম। এক বছরের মধ্যে শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে পড়ে গিয়ে এখন বিনিয়োগকারীরা ‘ফকির’ হওয়ার আশঙ্কায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও স্টকনাও থেকে পাওয়া তথ্যে এই বিপর্যয়ের চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

আমরা নেটওয়ার্ক, আমরা টেকনোলজি, আলিফ ইন্ডাষ্ট্রিজ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, লাফার্জ হোলসিম, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ইউনিক হোটেল—এই ১০ কোম্পানির শেয়ার গত এক বছরে তলানিতে পৌঁছেছে। আর যারা উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনেছিলেন, তারা আজ হঠাৎ খুঁজে পাচ্ছেন না তাদের বিনিয়োগের কোনো মূল্য।

আরও পড়ুন:

শেয়ারবাজারে দুঃসময়: দুই সপ্তাহে মূলধন কমল ১১ হাজার কোটি টাকা

সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণ: শেয়ারবাজারে দাম বেড়েছে ৭ খাতে, কমেছে ১২ খাতে

আলিফ ইন্ডাষ্ট্রিজ-এর শেয়ার দাম গত বছর মে মাসে ছিল ১৩৮ টাকা, কিন্তু বর্তমানে তা ৫৬ টাকা ৭০ পয়সায় এসে দাঁড়িয়েছে। গত দুই সপ্তাহে এর দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে এবং ডিএসইর পতনশীল শেয়ারগুলোর শীর্ষে অবস্থান করছে। এমনকি, ৮০ টাকার ওপরে লেনদেন হওয়া শেয়ারটি এখন প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, আমরা নেটওয়ার্ক কোম্পানির শেয়ার গত বছরের মে মাসে ৪১ টাকা ৪০ পয়সা দামে লেনদেন হয়েছিল, আর এখন তা নেমে এসেছে ২৩ টাকায়, অর্থাৎ ১৮ টাকা ৪০ পয়সা কমেছে মাত্র এক বছরে।

আমরা টেকনোলজি-এর শেয়ারও একসময় ছিল ২৮ টাকা ৪০ পয়সায়, বর্তমানে ২৩ টাকায় এটি বিক্রি হচ্ছে। শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ১৪ টাকা ৫০ পয়সা।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এর শেয়ার আগস্ট মাসে ৮ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হলেও এখন তা ৩ টাকা ৮০ পয়সায়, প্রায় ৪ টাকা ৫০ পয়সা কমেছে।

লাফার্জ হোলসিম শেয়ারের দাম গত মার্চ ও আগস্ট মাসে ছিল ৭৪ টাকা ৬০ পয়সা, কিন্তু এখন তা ৪৫ টাকা ৭০ পয়সায় পৌঁছেছে। শেয়ারটি ২৮ টাকা ৯০ পয়সা কমে গেছে।

ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ইউনিক হোটেল—এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারও অভাবনীয় পতন ঘটেছে। সবার দামই সাড়ে চার টাকার নিচে নেমে এসেছে, যেখানে আগের দাম ছিল অনেক বেশি।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধসের কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন দিশাহীন। একদিকে ক্ষতি অপরদিকে উদ্বেগ, এভাবে চলতে থাকলে শেয়ারবাজারে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। তারা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বলেছেন, এখনই বাজারে ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।

সবমিলিয়ে, শেয়ারবাজারে যে রকম অস্থিরতা বিরাজ করছে, তাতে আগের থেকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে বিনিয়োগকারীদের। একসময় যারা শেয়ার কেনার মাধ্যমে লাভের আশায় ছিলেন, তাদের এখন বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

রাজিব/

শেয়ার নিউজ - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ