ঢাকা, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

ট্রাম্পের কঠোর সিদ্ধান্ত: পাঁচ লাখেরও বেশি অভিবাসীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ২২ ১০:৪৪:২৭
ট্রাম্পের কঠোর সিদ্ধান্ত: পাঁচ লাখেরও বেশি অভিবাসীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে নতুন করে ঝড় তুলেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত। কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসীর অস্থায়ী আইনি মর্যাদা এক কলমের খোঁচায় বাতিলের পথে। দীর্ঘদিন ধরে আশার আলো দেখে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই মানুষগুলোর জীবনে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ।

ফেডারেল রেজিস্ট্রারে প্রকাশিত সিদ্ধান্ত

শুক্রবার (২১ মার্চ) মার্কিন ফেডারেল রেজিস্ট্রারে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই অভিবাসীদের ২৪ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে। অন্যথায়, তাদের পারমিট ও বহিষ্কার সুরক্ষা বাতিল করা হবে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোরতা আরোপের অংশ।

ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসননীতি

ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান পার্টির শক্তিশালী নেতা হিসেবে, বরাবরই কঠোর অভিবাসন নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। তার মতে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চালু করা প্যারোল কর্মসূচিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছে। এ কারণেই ২০ জানুয়ারির এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ট্রাম্প এসব কর্মসূচি বাতিলের ঘোষণা দেন।

ইউক্রেনীয় অভিবাসীদের জন্য নতুন সংকেত

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি শুধু এই চার দেশের অভিবাসীদের জন্যই নয়। তিনি সম্প্রতি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনীয়র প্যারোল মর্যাদা বাতিল করা হবে কি না, সে বিষয়েও শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন এই মর্যাদা এপ্রিলের মধ্যেই প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছে।

বাইডেন প্রশাসনের নীতি ও পরিবর্তনের ছোঁয়া

২০২২ সালে বাইডেন প্রশাসন ভেনেজুয়েলাবাসীদের জন্য প্যারোল প্রবেশাধিকার চালু করেছিল, যা ২০২৩ সালে কিউবা, হাইতি ও নিকারাগুয়ার অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত হয়। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল সীমান্ত পারাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৫ লাখ অভিবাসী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হতে পারেন।

ফেডারেল সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

সোমবার (২৫ মার্চ) ফেডারেল রেজিস্ট্রারে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানায়, প্যারোল মর্যাদা বাতিলের ফলে এসব অভিবাসীকে দ্রুত নির্বাসনের আওতায় আনা সহজ হবে।

দ্রুত নির্বাসন প্রক্রিয়ার উদ্বেগ

ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছরের কম সময় ধরে বসবাসরত নির্দিষ্ট কিছু অভিবাসীর ক্ষেত্রে দ্রুত নির্বাসন (এক্সপেডাইটেড রিমুভাল) প্রক্রিয়া কার্যকর হতে পারে। এ সিদ্ধান্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

নির্বাচনের আগে অভিবাসন ইস্যুতে উত্তাপ

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপের রাজনৈতিক প্রভাব নিয়েও চলছে বিশ্লেষণ। অভিবাসনপন্থী গোষ্ঠীগুলো এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠতে পারে, যা ট্রাম্পের নির্বাচনী কৌশলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

অভিবাসীদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। তারা কি নতুন করে স্বপ্ন দেখার সুযোগ পাবে, নাকি তাদের জন্য রচিত হতে চলেছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত অধ্যায়? সময়ই দেবে তার উত্তর।

সজিব/

বিশ্ব - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ