রমজানে মহানবীর (সা.) দানশীলতা: এক অনন্য দৃষ্টান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান মাস শুধু আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের সময়ই নয়, বরং এটি দান-সদকার এক মহিমান্বিত সুযোগও বটে। ইসলামী শিক্ষায় রমজানের তিনটি মূল স্তম্ভ হলো—রোজা রাখা, রাতে ইবাদত করা (কিয়ামুল লাইল) এবং দান ও জনকল্যাণমূলক কাজ করা। তবে আজকের সমাজে আমরা ব্যক্তিগত ইবাদতে বেশি মনোযোগী হয়ে দান-সদকার গুরুত্ব অনেকাংশে ভুলে যাচ্ছি। অথচ প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মানবজাতির মধ্যে সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি, বিশেষ করে রমজান মাসে তাঁর দান বহুগুণ বেড়ে যেত।
রমজানে রাসুল (সা.)-এর দানশীলতা কেমন ছিল?
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) ছিলেন মানবকুলের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল। রমজান মাসে যখন ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) তাঁর কাছে নিয়মিত আসতেন এবং কোরআন পাঠের অনুশীলন করতেন, তখন তাঁর দানশীলতা ঝড়ো বাতাসের চেয়েও বেগবান হয়ে উঠত।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৩০৮)
বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত ইবনে মুনাইয়ির (রহ.) বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর দান ছিল এমন যে, তা দরিদ্র-অভাবী থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে যেত। এটি ছিল মুক্ত শীতল বায়ুর মতো, যা পরে প্রবল বর্ষণ এনে দেয়।’ (ফাতহুল বারি, ৪/১৩৯ ও ১/৪১)
দান শুধু সম্পদের নয়, জ্ঞানেরও
রাসুল (সা.) শুধু অর্থ-সম্পদ দান করতেন না, বরং আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানও অকাতরে বিলিয়ে দিতেন। ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘রাসুলের (সা.) দানশীলতা সর্বব্যাপী ছিল। তিনি শুধু অর্থ ব্যয় করতেন না, বরং মানুষের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর দেওয়া জ্ঞানকেও দান করতেন।’ (মাজমুউ ফাতাওয়া, ২০/২৬২)
রমজানে দান-সদকার ফজিলত
হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘কোন সদকা সর্বোত্তম?’ তিনি বলেন, ‘রমজানের সদকা।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৬৬৩)
এ মাসকে ‘সহমর্মিতার মাস’ বলা হয়, যেখানে একে অপরকে সাহায্য করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে, অথচ রোজাদারের সওয়াবেও কোনো হ্রাস পাবে না।’ (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১৭৭৮; বাইহাকি, শুয়াবুল ইমান, হাদিস: ৩৩৩১)
সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
রমজানে প্রতিটি আমলের ফজিলত ৭০ গুণ বৃদ্ধি পায়। ৭০টি নফল একটি ফরজের সমান হয়ে যায়। আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, ‘রমজান মাসে অন্যান্য মাসের তুলনায় রাসুল (সা.) অনেক বেশি দান করতেন।’ (নাসায়ি, হাদিস: ৩০৩০)
ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর অনুসরণে এ মাসে অধিক হারে দান করা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কারণ, রমজানে অধিকাংশ মানুষ ইবাদতে মনোযোগী থাকার কারণে উপার্জনে ঘাটতি দেখা দেয়, তাই এ দান সামগ্রিকভাবে কল্যাণ বয়ে আনে।’ (বাইহাকি, মারেফাতুন সুনানি ওয়াল আসার, ৭/৩০৭)
কীভাবে রমজানে দান-সদকা করতে পারেন?
দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ করুন।
এতিম ও অসহায় শিশুদের সহায়তা দিন।
মসজিদ-মাদ্রাসায় অনুদান দিন।
অসুস্থ ও অসহায়দের চিকিৎসায় সাহায্য করুন।
সমাজের দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ান।
রমজান শুধু রোজা রাখার মাস নয়, এটি দানশীলতারও মাস। রাসুল (সা.) আমাদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তাই আসুন, আমরা তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে এই মাসে আমাদের দানশীলতা বাড়াই, অসহায়দের পাশে দাঁড়াই, এবং মানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করি। আপনার একটি সদকা কারও মুখে হাসি ফোটাতে পারে!
আব্দুর রহিম/
ধর্ম - এর সব খবর
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ব্রাজিল বনাম কলম্বিয়া: হাইভোল্টেজ লড়াইয়ের পরিসংখ্যান ও সম্ভাব্য একাদশ
- শেষ হলো ব্রাজিল বনাম কলম্বিয়ার মধ্যকার ম্যাচ
- আছিয়ার শেষ স্বীকারোক্তি: আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)
- আইপিএলে তাসকিনকে দলে নিবে কি না জানিয়ে দিলো লখনৌ
- নেশনস লিগ: শেষ হলো ফ্রান্স বনাম ক্রোয়েশিয়ার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ
- আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ
- শিশু আছিয়া ধ/র্ষণ ও হ/ত্যা মামলার প্রধান আসামী হিটু শেখের আদালতে স্বীকারোক্তি
- মুস্তাফিজ নাকি তাসকিন আইপিএল খেলার জন্য কাকে এনওসি দিবে বিসিবি
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার (১৯ মার্চ ২০২৫)
- শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসা নিয়ে ট্রাম্পের পোস্ট জানা গেল সত্যতা
- লারার রেকর্ড ভেঙে টেস্টে ৪০৪ রানের ইনিংস খেললেন বাংলাদেশের মুস্তাকিম
- সেনাবাহিনীকে নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
- ৭৫ লাখ রুপিতে আইপিএলে দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ
- অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপন: সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য সুখবর
- আওয়ামী লীগের পতনের কারণ