ঢাকা, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

শেখ হাসিনাকে নিয়ে রাষ্ট্রদূত মুশফিকের ফেসবুক পোস্ট

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ২১ ১১:৫০:৫৭
শেখ হাসিনাকে নিয়ে রাষ্ট্রদূত মুশফিকের ফেসবুক পোস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তার সাম্প্রতিক এক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (২১ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, "এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি শান্তি ও স্থিতি। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। শুধু প্রাণহানি নয়, আমরা মর্যাদা ও সম্মানও হারিয়েছি।"

তার কথায় ফুটে ওঠে অতীতের দুঃসহ দিনগুলোর স্মৃতি, যখন বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি বর্বর রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হতো। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, "এখন আমরা সাহসী, বিজয়ী ও মর্যাদাবান জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছি। বর্বর গোষ্ঠীর কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।"

বেদনাবিধুর অতীত ও বিচারের দাবি

রাষ্ট্রদূত মুশফিক তার লেখায় সাম্প্রতিক সময়ের শহিদদের স্মরণ করেন। আবেগঘন ভাষায় বলেন, "আমাদের কষ্ট কখনই অবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম কিংবা ফাইয়াজের মায়ের তুলনায় বেশি নয়।"

তিনি সরাসরি অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, যাকে তিনি "জাতিসংঘ স্বীকৃত খুনের নির্দেশদাতা ও লুটেরা" বলে আখ্যায়িত করেছেন। তার ভাষায়, "শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে। তবে সেই সঙ্গে তার রাজনৈতিক বলয়ের প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা সংশোধনযোগ্য মানুষদের জন্যও ফিরে আসার পথ উন্মুক্ত রাখতে হবে।"

তবে তিনি সহিংসতার পথে হাঁটার বিপক্ষে সতর্ক করে বলেন, "অসহিষ্ণু ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকতে হবে, যা স্বার্থান্বেষী মহলের নজরকাড়া চিত্র তুলে ধরতে পারে।"

গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের স্বপ্ন

রাষ্ট্রদূত মুশফিক তার স্ট্যাটাসে একটি নতুন, উদার ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্নের কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, "গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পচাগলা অবস্থা থেকে দেশটাকে বাঁচাতে দেন-দরবার করার মতো একটি সরকার আপনারাই গঠন করেছিলেন।"

তার ভাষায়, "আমাদের প্রথা ও প্রতিষ্ঠানের যে সামান্যটুকু অবশিষ্ট আছে, সেটি ধরে রেখে নিজেদের গড়া সরকারের সাথেই বোঝাপড়া করা উচিত। এটি ব্যক্তি স্বার্থের বিষয় নয়, এটি একটি বৈষম্যহীন ও উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লড়াই।"

সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন

রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং ক্ষমতাসীন সরকারকে আরও চাপের মুখে ফেলবে।

এখন দেখার বিষয়, রাষ্ট্রদূতের এই প্রতিবাদী কণ্ঠ কেবল একটি স্ট্যাটাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি এটি বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিবর্তনের সুর বয়ে আনে। সময়ই দেবে এর উত্তর।

মো: রাজিব আলী/

রাজনীতি - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ