ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১

ঈদের নামাজে মাসবুক হলে করণীয়: কী করবেন, কী করবেন না?

২০২৫ মার্চ ২০ ১৭:৫৬:২৫
ঈদের নামাজে মাসবুক হলে করণীয়: কী করবেন, কী করবেন না?

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশির জোয়ার। মুসলিম উম্মাহর জন্য ঈদের দিনটি এক অনন্য দ্যোতনার উৎস। এই পবিত্র দিনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো ঈদের নামাজ। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ একই নিয়মে আদায় করা হয় এবং ইসলামে এটি ওয়াজিব হিসেবে নির্ধারিত।

ঈদের নামাজ কোথায় ও কীভাবে আদায় করবেন?

ঈদের নামাজ আদায়ের উত্তম স্থান হলো খোলা ময়দান। বিশাল জনসমাগম, খোলামেলা পরিবেশ এবং আল্লাহর প্রশংসায় মুখরিত ঈদের মাঠ এই নামাজের আনন্দকে বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। তবে মক্কাবাসীদের জন্য মসজিদে হারামে নামাজ পড়াই উত্তম। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা বৈধ ও গ্রহণযোগ্য।

ঈদের নামাজের নিয়ম ও বিশেষ তাকবির

ঈদের নামাজ দুই রাকাতের হয়ে থাকে এবং এতে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির দেওয়া হয়, যা একে অন্যান্য নামাজ থেকে আলাদা করে তোলে।

প্রথম রাকাত: তাকবিরে তাহরিমার পর ‘ছানা’ পাঠ করা হয়, এরপর তিনটি অতিরিক্ত তাকবির দিতে হয়।

দ্বিতীয় রাকাত: কেরাত পাঠের পর রুকুতে যাওয়ার আগে আরও তিনটি অতিরিক্ত তাকবির বলতে হয়।

তাকবির আদায়ের নিয়ম: প্রতিটি তাকবির বলার সময় হাত উঠানো আবশ্যক, তবে তৃতীয় তাকবির ছাড়া অন্যান্য তাকবিরের পর হাত ছেড়ে দিতে হয়।

ঈদের নামাজে মাসবুক হলে কী করবেন?

অনেক সময় মুসল্লিরা দেরিতে পৌঁছান এবং নামাজের কিছু অংশ মিস করে ফেলেন, যাকে মাসবুক বলা হয়।

যদি কেউ তাকবিরগুলো না পেয়ে থাকেন, তবে রুকুতে থাকা অবস্থায় সেগুলো আদায় করা যাবে।

যদি কোনো মুসল্লি সম্পূর্ণ এক রাকাত মিস করেন, তবে দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পর তাকবিরগুলো আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে কেরাতের আগে আদায় করার সুযোগও রয়েছে।

ঈদের নামাজ ছুটে গেলে করণীয়

জীবনের ব্যস্ততা, অনিবার্য কারণ বা ভুলে যাওয়ার কারণে অনেকেরই ঈদের নামাজ ছুটে যেতে পারে।

নামাজ ছুটে গেলে শহরের অন্য কোনো ঈদের জামাতে শরিক হওয়ার চেষ্টা করুন।

যদি কোনোভাবেই নামাজে অংশগ্রহণ সম্ভব না হয়, তবে এর কাজা নেই। তবে ইবাদতের অভাব পূরণের জন্য চার রাকাত এশরাকের নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে এতে ঈদের অতিরিক্ত তাকবিরগুলো বলার প্রয়োজন নেই।

ঈদের নামাজ ও খুতবার গুরুত্ব

নামাজ শেষে ইমাম খুতবা প্রদান করেন, যা ঈদের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ইমামের জন্য: এটি সুন্নত।

মুসল্লিদের জন্য: এটি শ্রবণ করা ওয়াজিব।

খুতবা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরে বসে থাকা উচিত।

ঈদের নামাজ নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)

প্রশ্ন: ঈদের নামাজের জন্য কি গোসল করা জরুরি?

উত্তর: না, তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা সুন্নত।

প্রশ্ন: ঈদের নামাজ কি বাসায় পড়া যায়?

উত্তর: না, এটি জামাতে পড়তে হয়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে বাসায় পড়ার অনুমতি রয়েছে।

প্রশ্ন: ঈদের নামাজ কয় রাকাত?

উত্তর: দুই রাকাত।

ঈদের নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক অনন্য উপলক্ষ। সঠিক নিয়ম মেনে ঈদের নামাজ আদায় করলে এটি শুধু ইবাদত হিসেবে নয়, বরং সমাজের বন্ধনকেও আরও সুদৃঢ় করে। যারা মাসবুক হন বা কোনো কারণে ঈদের নামাজ মিস করেন, তাদের জন্য শরীয়ত সহজ বিধান রেখেছে। তাই এই আনন্দঘন দিনে সবাই যেন সঠিক নিয়ম মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন, সেটাই কাম্য।

আব্দুর রহিম/

ধর্ম - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ