ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১

হাজার দু:সংবাদের মধ্যে একটা সুখবর পেলেন সাকিব

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ২০ ১০:২৫:৫৫
হাজার দু:সংবাদের মধ্যে একটা সুখবর পেলেন সাকিব

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে এলো এক সুসংবাদ। যখন বাংলাদেশজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা পবিত্র রমজানের সাহরিতে ব্যস্ত, তখনই ইংল্যান্ড থেকে ভেসে এলো এক সুখবর—নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল ছিন্ন করে ফিরলেন সাকিব আল হাসান। দীর্ঘদিনের লড়াই, অনিশ্চয়তা আর পরিশ্রমের ফসল হিসেবে অবশেষে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

ফিরে আসার লড়াই

গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয়েছিল সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সংশয়। ইংল্যান্ডের কাউন্টি দল সারের হয়ে খেলার সময় আম্পায়ারদের নজরে আসে তার অ্যাকশনের সমস্যা। বার্মিংহ্যাম ও চেন্নাইয়ের দুই পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হন তিনি, ফলে নেমে আসে নিষেধাজ্ঞার গারদ।

কিন্তু সাকিব হাল ছাড়েননি। নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য সারের কোচ গ্যারেথ ব্যাটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে থাকেন। দিনরাত অনুশীলন, টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ আর ধৈর্যের পরীক্ষা শেষে অবশেষে সফলতা ধরা দিলো।

শুভ সংবাদ পৌঁছালো ইংল্যান্ড থেকে

বাংলা টাইগার্সের পক্ষ থেকে এবং ইংল্যান্ডে থাকা সাকিবের বন্ধু খাদেমুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে, সাকিব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ডেই অবস্থান করছেন এবং এই সুখবর তার জন্য যেমন স্বস্তির, তেমনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও এক বিরাট প্রাপ্তি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার দুয়ার উন্মুক্ত

এই পরীক্ষায় পাস করায় সাকিব এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসহ ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে আবার বোলিং করতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কেবল ব্যাটার হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়নি। এবার অলরাউন্ড ভূমিকায় আবারও দলে ফিরতে পারবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তবে নতুন করে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী তাকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে। তাই সাকিবের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ—নিজের অ্যাকশনকে নিখুঁত রাখা।

কীভাবে শুরু হয়েছিল এই জটিলতা?

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সফর শেষে দেশে না ফিরে ইংল্যান্ডে সারের হয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন সাকিব। সেখানে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬৩ ওভার বল করে ৯ উইকেট শিকার করেন। কিন্তু সেই ম্যাচেই আম্পায়ারদের সন্দেহ হয় তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে।

এরপর বার্মিংহ্যামের লাফবরো ইউনিভার্সিটির ল্যাবে পরীক্ষা দেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। এরপর ২১ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ের শ্রী রমাচন্দ্র সেন্টার ফর স্পোর্টস সায়েন্সে আরেক দফা পরীক্ষা দিলেও তিনি পাস করতে পারেননি। সেই ব্যর্থতার পর আসে দীর্ঘ সময়ের অনুশীলন এবং পরিশ্রমের অধ্যায়। অবশেষে সেই অধ্যায়ের সফল সমাপ্তি ঘটলো।

নতুন প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় সাকিব

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে সাকিব বরাবরের মতোই একজন যোদ্ধা। এই লড়াইটা শুধু তার একার নয়, এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও এক বড় জয়। তার প্রত্যাবর্তন শুধু একটি নামের নয়, এটি একটি অধ্যায়ের—যেখানে সংকল্প, পরিশ্রম আর দৃঢ় মনোবল মিলিত হয়েছে এক অনন্য সফলতায়।

বাংলাদেশ ক্রিকেট আবারও একবার তার সেরা অলরাউন্ডারকে ফিরে পেয়েছে। এবার দেখার পালা, নতুন সাকিব কতটা ঝলসে উঠতে পারেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে।

মো: ফারুক/

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ