ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

শহিদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই মেয়ে নির্মমতার শিকার

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ১৯ ২১:২০:৩৫
শহিদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই মেয়ে নির্মমতার শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহিদ হওয়া পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার এক ব্যক্তির ১৭ বছর বয়সী মেয়ের উপর নেমে এলো ভয়াবহ নির্মমতা। বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে দুষ্কৃতিকারীদের লালসার শিকার হন তিনি। পুলিশের তৎপরতায় একজনকে আটক করা হলেও, আরেকজন এখনও অধরা।

মর্মান্তিক ঘটনার বিবরণ

গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যার পর পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। বাবার কবর জিয়ারত শেষে মেয়েটি যখন নানাবাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন, তখনই তাকে নজরে রাখছিল দুষ্কৃতিকারীরা। নলদোয়ানী এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় দুই যুবক, সাকিব মুন্সি ও সিফাত মুন্সি, তাকে অনুসরণ করতে থাকে। একপর্যায়ে, সুযোগ বুঝে তারা তার মুখ চেপে ধরে পাশের জলিল মুন্সির ভিটা বাগানে নিয়ে যায়।

নির্জন ওই বাগানে তারা পালাক্রমে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, ঘটনার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে চুপ থাকার হুমকিও দেয়। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালায়।

আইনের শাসনের প্রত্যাশা

অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের আলগী গ্রামের বাসিন্দা মামুন মুন্সির ছেলে সাকিব মুন্সিকে আটক করে। তবে তার সহযোগী সিফাত মুন্সি, যিনি সোহাগ মুন্সির ছেলে, এখনো পলাতক রয়েছে।

দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন জানান, "ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে পলাতক আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"

সমাজের প্রতিক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের দাবি

এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছে। স্থানীয় অধিবাসীরা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। মানবাধিকার কর্মী ও সমাজকর্মীরা বলছেন, "একজন শহিদের পরিবার যদি এমন নির্যাতনের শিকার হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।"

বর্তমানে ভুক্তভোগী মেয়ে চিকিৎসাধীন এবং তার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। প্রশাসনের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপই পারে এই নির্মম ঘটনার ক্ষত কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে।

রাজিব আলী/

সারাদেশ - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ