ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

MD. RAZIB ALI

Senior Reporter

শেষ পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ১৮ ১১:৪০:৪৪
শেষ পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডানেডিনের ঠাণ্ডা হাওয়ার উল্টো দিকে যেন আগুন ঝরালো নিউজিল্যান্ড! বৃষ্টি-ছেঁড়া ম্যাচে ব্যাটে-বলে সমান আধিপত্য দেখিয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল কিউইরা।

পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আগার লড়াকু ৪৬ রান ও শাহীন শাহ আফ্রিদির শেষ মুহূর্তের ঝড়ো ক্যামিও দলকে ১৩৫ রানে পৌঁছে দিলেও, নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটিই একপ্রকার ম্যাচের নিষ্পত্তি করে দেয়। ফিন অ্যালেন আর টিম সেইফার্ট যেন ঝড় তুললেন ব্যাট হাতে! মাত্র ২৮ বলে ৬৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে পড়ে।

পাকিস্তানের ব্যাটিং: সূচনার ধাক্কায় গুটিয়ে যাওয়া গল্প

নিউজিল্যান্ডের স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক মাইকেল ব্রেসওয়েল টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান, আর প্রথম ওভার থেকেই স্বাগতিক বোলাররা চেপে ধরেন সফরকারীদের। জ্যাকব ডাফির দুর্দান্ত একটি বাউন্সারে হাসান নওয়াজের ব্যাট থেকে ক্যাচ উঠে গেলে, পাকিস্তান প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায়। অন্যদিকে, মোহাম্মদ হারিস মাত্র ১১ রান করেই বেন সিয়ার্সের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন।

পাকিস্তান তখন বিপদে, তবে ক্যাপ্টেন সালমান আগা দায়িত্ব নেন। হাত খুলে স্ট্রোক খেলে দলের রানের চাকা সচল করেন। তবে তার লড়াইও বেশিক্ষণ টিকল না। ইশ সোধির লেগস্পিন ভেলকিতে পাকিস্তান হারাল ইরফান খান ও খুশদিল শাহকে। আগাও বেশিক্ষণ টিকলেন না, ১০তম ওভারে বেন সিয়ার্সের শিকার হলেন তিনি।

শেষদিকে শাদাব খানের ২৬ ও শাহীন শাহ আফ্রিদির ২২ রানের ছোট ঝড় কিছুটা আশা জাগালেও, ১৫ ওভারের ম্যাচে পাকিস্তানের সংগ্রহ হলো ১৩৫/৯। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সোধি ২ উইকেট (১৭ রান), ডাফি ২ উইকেট (২০ রান) এবং সিয়ার্স ২ উইকেট (২৩ রান) নিয়ে পাকিস্তানকে বেঁধে ফেলেন।

নিউজিল্যান্ডের ইনিংস: শুরুতেই বাজিমাত সেইফার্ট-অ্যালেনের

ছোট লক্ষ্য, তার ওপর দুনেডিনের ছোট মাঠ— কিন্তু শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভার মেডেন দিয়ে শুরু করায় পাকিস্তান শিবিরে কিছুটা আশার আলো জ্বলে ওঠে। তবে সেই আলো বেশি দূর এগোতে পারল না।

দ্বিতীয় ওভারেই বদলে গেল ম্যাচের রঙ! মোহাম্মদ আলির ব্যাক-অফ-এ-লেংথ বলগুলো যেন ফিন অ্যালেনের জন্য ছিল পিকনিকের আমন্ত্রণপত্র। পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকালেন এই বিধ্বংসী ওপেনার। পরের ওভারে টিম সেইফার্ট আফ্রিদির বলেই মারলেন চারটি বিশাল ছক্কা! মাত্র তিন ওভারেই সাতটি ছক্কা, পাকিস্তানের কপালে তখন চিন্তার ভাঁজ।

সেইফার্টের ব্যাট চলতে থাকল আরও কিছুক্ষণ, ২২ বলে ৪৫ রান করে যখন তিনি বিদায় নিলেন, তখনও নিউজিল্যান্ডের কাজ প্রায় শেষ। ফিন অ্যালেন ১৬ বলে ৩৮ রানের ঝড় তুলে বিদায় নিলে, ৭ ওভারে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৮৮/২।

শেষদিকে কিছু উইকেট হারালেও (নিশাম-মিচেল দ্রুত ফিরে যান), মিচেল হেই (২১*) ও ব্রেসওয়েলের (৬*) ব্যাটে ১৩.১ ওভারেই জয় নিশ্চিত করে কিউইরা।

ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়া

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ টিম সেইফার্ট বলেন, "প্রথম ওভার মেডেন যাওয়ায় ভেবেছিলাম কঠিন হবে, কিন্তু তারপর অ্যালেন আর আমি মিলে সব সহজ করে ফেলি। দলের হয়ে আবার খেলতে পেরে ভালো লাগছে, এরকম জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।"

নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেসওয়েল বলেন, "আমরা উইকেটের অতিরিক্ত বাউন্স কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম, বোলাররা সেটা দারুণভাবে করেছে। আর ব্যাটিংয়ে পরিকল্পনা ছিল, বাতাসের বিপরীত দিক থেকে মারব, কিন্তু আমাদের ওপেনাররা দুই দিকেই ঝড় তুলেছে!"

পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা স্বীকার করলেন, "আগের ম্যাচের তুলনায় ভালো খেলেছি, তবে পাওয়ারপ্লেতে আরও ভালো করতে হবে। ব্যাটিং ভালো হয়েছে, কিন্তু ফিনিশিং ভালো হয়নি। বোলিং ভালো করলেও আরও ধারাবাহিক হতে হবে।"

এই জয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় ম্যাচ হবে অকল্যান্ডে, যেখানে পাকিস্তান হেরে গেলে সিরিজও হাতছাড়া হয়ে যাবে। এখন দেখার বিষয়, তারা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে নাকি কিউইরা আরও একটি জয় তুলে নিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করবে!

মো: রাজিব আলী/

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ