ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

সকালে খালি পেটে আদাজল: এক গ্লাস সুস্থতার গল্প

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ১৮ ১০:৫৫:৫৪
সকালে খালি পেটে আদাজল: এক গ্লাস সুস্থতার গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: সকালের শুরুটা যদি হয় এক গ্লাস উষ্ণ আদাজল দিয়ে, তবে কেমন হয়? শরীর-মন সতেজ রাখার এক সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় হতে পারে এটি। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি, পরিপাকতন্ত্র থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির এক অনন্য জাদুকাঠি যেন এই আদাজল।

কেন খাবেন খালি পেটে আদাজল?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস আদাজল পানের রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা।

পরিপাকতন্ত্রের বন্ধু: সকালের প্রথম পানীয় হিসেবে আদাজল হজমশক্তি উন্নত করে, বদহজম দূর করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায়।

শরীর রাখে আর্দ্র: আদাজল পান করলে দেহের পানিশূন্যতা দূর হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা লাঘব হয়।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে: এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখে ত্বককে সতেজ ও দীপ্তিময় করে তোলে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: নিয়মিত আদাজল পানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, যা বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়।

প্রদাহ ও ব্যথা উপশম করে: শরীরের কোথাও ব্যথা বা প্রদাহ থাকলে আদাজল প্রাকৃতিক ব্যথানাশকের মতো কাজ করে। রাতে হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করলে এর কার্যকারিতা আরও বাড়ে।

ওজন কমাতে সহায়ক: এটি বিপাকক্রিয়া বাড়ায় এবং দেহের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।

আদাজল তৈরির সঠিক পদ্ধতি

সঠিক নিয়মে আদাজল তৈরি করলে এর গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করুন।

এরপর এক গ্লাস পানি একটি পাত্রে চুলায় দিন।

এক ইঞ্চি আদা খোসা ছাড়িয়ে থেঁতলে বা কুচি করে রাখুন।

পানি ফুটতে শুরু করলে তাতে কুচি বা থেঁতলানো আদা দিন।

চুলা বন্ধ করে পাত্রটি ঢেকে রাখুন এবং ৫-৭ মিনিট অপেক্ষা করুন।

এরপর হালকা গরম অবস্থায় পান করুন।

আদাজল খাওয়ার অন্তত আধঘণ্টা পর সকালের নাশতা গ্রহণ করুন।

ব্যথা বা প্রদাহ থাকলে বিশেষ পরামর্শ

যদি শরীরে ব্যথা বা প্রদাহ থাকে, তবে রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সঙ্গে আধা চা-চামচ কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে পান করুন। তবে দুধের তাপমাত্রা সহনীয় অবস্থায় থাকতেই হলুদ মেশানো উচিত।

আদাজল পানের কোনো ক্ষতি আছে কি?

শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মুসআব খলিল জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে আদাজল খেলে দেহের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে হজমে সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে আদাজল পান করাই ভালো।

এক গ্লাস উষ্ণ আদাজল শুধু শরীরকেই চাঙ্গা রাখে না, এটি এক ধরনের সুস্থতার প্রতীকও বটে। দিনের শুরুতেই যদি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা যায়, তবে তা সারাদিনের কর্মশক্তির মূল উৎস হতে পারে। তাই প্রতিদিন সকালে আদাজল খাওয়ার এই সহজ অথচ কার্যকর উপায়টি আপনার দৈনন্দিন রুটিনে যুক্ত করুন, সুস্থ থাকুন, সতেজ থাকুন!

মো: রাজিব আলী/

স্বাস্থ্য - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ