ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ১৪ ১১:৫৬:২৬
আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট্ট শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুনের নির্মম পরিণতি পুরো সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই ভয়াবহ ঘটনার পর এবার তার শ্রেণিশিক্ষক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান প্রকাশ করেছেন কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা আমাদের সামাজিক বাস্তবতার এক নির্মম প্রতিচিত্র তুলে ধরেছে।

এক শিক্ষকের দৃষ্টিতে নিষ্পাপ এক শিশুর হারিয়ে যাওয়া

শিক্ষক মাহফুজ জানান, আছিয়া ছিল তার সরাসরি ছাত্রী, একজন নিষ্পাপ শিশু। তিনি বলেন, "আছিয়া পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল, কিন্তু তার পরিবারের দারিদ্র্য ও নিরাপত্তার অভাব তার জীবনকে দুর্বল করে তুলেছিল। এই ঘটনা শুধু একজন শিক্ষকের জন্য নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য গভীর বেদনাদায়ক। যদি আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপত্তা দিতে না পারি, তবে জাতি হিসেবে আমাদের ব্যর্থতা কোথায়?"

পরিবারের অভাব-অনটন ও নিষ্ঠুর বাস্তবতা

শিক্ষক মাহফুজ আরও জানান, আছিয়ার পরিবার দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত ছিল। তার বড় বোন মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। তবে সেই বিয়ে ছিল আরও এক শৃঙ্খল, আরও এক বন্দিত্ব। তিনি বলেন, "শুধু আছিয়াই নয়, তার বড় বোনও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। পরিবারে পিতৃতান্ত্রিক নিপীড়নের এক ভয়ংকর চিত্র আমরা দেখতে পাই, যেখানে বাপ-ছেলে মিলে এক তরুণীকে নিগৃহীত করেছে। কিন্তু সামাজিক মানসম্মানের কারণে হয়তো সে কখনো মুখ খুলতে পারেনি।"

আরও পড়ুন:

সেই রাতে যা ঘটেছিল জানালেন আছিয়ার মা

আছিয়ার শেষ স্বীকারোক্তি: আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)

প্রাথমিক শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব

শিক্ষক মাহফুজ মনে করেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিশুদের নিরাপত্তা ও সচেতনতা তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, "আমাদের পাঠ্যবইয়ে ‘ভালো ও খারাপ স্পর্শ’ সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। শিশুদের আরও গভীরভাবে এই বিষয়ে সচেতন করা জরুরি। শুধু আইন কঠোর করলেই হবে না, আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে। দরিদ্র পরিবারগুলোকে বোঝাতে হবে যে, অল্প বয়সে বিয়ে কিংবা সন্তানদের প্রতি অবহেলা কতোটা ভয়ংকর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।"

সমাজ, ধর্ম ও নৈতিকতার শিক্ষা

তার মতে, সমাজের প্রতিটি স্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রচার আরও জোরদার করা উচিত। তিনি বলেন, "সমস্ত ধর্মই ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমরা যদি সত্যিকারের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে পারি, তবে হয়তো এমন ভয়ংকর অপরাধ আর ঘটবে না।"

একটি শিশুর আর্তনাদ ও জাতির দায়

শিক্ষক মাহফুজ মনে করেন, আছিয়ার মতো ঘটনা রোধ করতে পরিবার, বিদ্যালয়, সমাজ ও রাষ্ট্রকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, "আমাদের সমাজে শিশুরা কি নিরাপদ? যদি উত্তর 'না' হয়, তাহলে আমাদের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। আছিয়ার মতো নিষ্পাপ মুখগুলো যেন নিপীড়নের শিকার না হয়, সে জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। অন্যথায়, এই মর্মান্তিক অধ্যায় চলতেই থাকবে, যা পুরো জাতির জন্য এক গভীর লজ্জার বিষয় হয়ে থাকবে।"

রাজিব/

জাতীয় - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ