ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

৩৬ কোম্পানির ৪ কোটি ২৬ লাখ শেয়ার অবরুদ্ধ: আদালতের রায়

২০২৫ মার্চ ১৩ ১৬:০৩:৩৯
৩৬ কোম্পানির ৪ কোটি ২৬ লাখ শেয়ার অবরুদ্ধ: আদালতের রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গতকাল আদালতের রায়ে জেমকন গ্রুপের ৩৬টি কোম্পানির মোট ৪ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৮৬৮ শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এই শেয়ারগুলোর মোট মূল্য অনুমান করা হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি ৪৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। আদালত এই আদেশ দিয়েছে যাতে কোনোভাবেই এসব শেয়ার হস্তান্তরিত বা বিক্রয় হতে না পারে, যা তদন্তের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ, জাকির হোসেন গালিব, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দেন। দুদক জানায়, অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেমকন গ্রুপের মালিকপক্ষের কয়েকজন সদস্য—কাজী নাবিল আহমেদ, কাজী আনিস আহমেদ, কাজী ইনাম আহমেদ, প্রয়াত কাজী শাহেদ আহমেদের স্ত্রী আমিনা আহমেদ—এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এই শেয়ারগুলোর মালিক।

এই শেয়ারগুলো অবরুদ্ধ করার মূল উদ্দেশ্য হলো, যদি এগুলো হস্তান্তরিত হয়, তবে মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। তাছাড়া, যদি এসমস্ত শেয়ার বিক্রি হয়ে যায়, তবে মামলার চার্জশিট দাখিল এবং তদন্তের মধ্যে বাধা সৃষ্টি হতে পারে, যা রাষ্ট্রের আইনি কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে পারে।

কেন গুরুত্বপূর্ণ এই আদালতের আদেশ?

এটি শুধু একটি শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ নয়; বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয় যে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দুর্নীতি এবং অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দুদকের এই পদক্ষেপ আরও একটি ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায়।

এখন, এসব শেয়ার অবরুদ্ধ থাকলে, মামলার তদন্ত সহজ হবে এবং আইনি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না। দুদক আশা করছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।

ভবিষ্যতে কী হতে পারে?

এই রায়ের পর, যেকোনো ধরনের সম্পত্তি বা শেয়ার বিক্রির চেষ্টা হলে তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী, সরকার শেয়ারগুলোর উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করবে এবং পরবর্তী সময়ে এগুলো বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন:

শেয়ারবাজারে কারসাজি: বিএসইসি'র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে সামনে এলো গুরুত্বপূর্ণ নাম

অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলো শেয়ার দর ডিএসইর সতর্কবার্তা

এখন, প্রশ্ন উঠতে পারে—এটি কি শুধুমাত্র জেমকন গ্রুপের জন্যই? না, এটি একটি বড় ছবি দেখাচ্ছে—এটি অন্যান্য ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোকে সাবধান করে দিচ্ছে যে, তাদের কোনো ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ বা দুর্নীতি সবার চোখে পড়বে এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

এই রায়ের প্রভাব:

এটি দেশের শেয়ার বাজার ও ব্যবসায়ী মহলে এক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে। জেমকন গ্রুপের শেয়ারগুলোর উপর আদালতের রায় দেশের ব্যবসায়িক খাতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হতে পারে।

রাজিব আলী/

শেয়ার নিউজ - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ