ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

এনসিপিকে নিয়ে বিএনপির অস্বস্তি

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ১১ ১৫:৪৮:৩৭
এনসিপিকে নিয়ে বিএনপির অস্বস্তি

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শগত ও কৌশলগত ফারাক ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় পরিষদ ও জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে মতের পার্থক্য তৈরি হয়েছে। ফলে বিএনপি এনসিপি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বলেন, এনসিপি এমন একটি দল যা গঠনের পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। তিনি একাধিকবার বিদেশি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন যে, তিনি এনসিপির নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দল গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, যদি তারা দল না গঠন করে, তবে গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা অন্য দলগুলোর দ্বারা হাইজ্যাক হয়ে যাবে।

রুমিন ফারহানা বলেন, "ড. ইউনূসের এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, এনসিপির প্রতি তার আস্থা এবং বিশ্বাস অটুট। তাহলে এটিকে আমি 'রাজাদের দল' না বলি কেন?"

তিনি আরও বলেন, "এই নতুন রাজনৈতিক দলকে কেন আমরা 'রাজাদের দল' বলছি, সেটার পেছনে কারণ রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বিদায় নেওয়ার পরপরই প্রধান উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ প্রেস সচিব নাহিদকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতে বোঝা যায়, এই দলের প্রতি একধরনের গভীর সহানুভূতি রয়েছে।"

রুমিন প্রশ্ন তোলেন, "যদি বিএনপির ক্ষেত্রে এমন কিছু বলা হতো, তাহলে অন্য দলগুলো কি অস্বস্তিতে ভুগতো না? বিএনপি যদি সরকারের প্রতি এমন কোনো বিশেষ সংযোগ দেখাতো, তাহলে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপিকে নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়তো। এখন যখন বিএনপি এমন পরিস্থিতির শিকার, তখন কি বিএনপিকে দোষ দেওয়া যায়?"

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, "নির্বাচন কবে হবে—এটা এখন 'মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন'। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ স্বাভাবিক নির্বাচিত সরকারের চেয়ে কম হবে, কিন্তু ঠিক কত কম, সেটা স্পষ্ট করেননি।"

তিনি উল্লেখ করেন, "প্রধান উপদেষ্টার নানান বক্তব্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কেউ বলছেন নির্বাচন এই বছরেই হবে, আবার কেউ বলছেন আগামী বছরের শুরুর দিকে হবে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের মার্চ মাসে হতে পারে।"

রুমিন ফারহানা মনে করেন, "নির্বাচনের সময় নিয়ে এই অনিশ্চয়তা জনমনে অস্বস্তির জন্ম দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোও বিভ্রান্তিতে পড়ছে। যারা নির্বাচন করতে চায়, তাদের প্রস্তুতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যখন একেক সময় একেক ধরনের তথ্য আসে, তখন সেটি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।"

বিএনপির এই নেত্রী আরও বলেন, "এই ধরনের পরিস্থিতি শুধু বিএনপিকেই নয়, পুরো রাজনৈতিক অঙ্গনকেই অস্থিরতার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। নির্বাচনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা না থাকলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও গভীর হবে, যা কারও জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না।"

রাজনীতি - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ