ঢাকা, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

বিএসইসির সঙ্গে বৈঠক শেষ, অস্থিরতা নিরসনে যা চাইলেন স্টেকহোল্ডাররা

২০২৫ মার্চ ০৯ ২১:৫৪:৪৮
বিএসইসির সঙ্গে বৈঠক শেষ, অস্থিরতা নিরসনে যা চাইলেন স্টেকহোল্ডাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-তে সম্প্রতি যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তবে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে স্টেকহোল্ডাররা একযোগে কাজ শুরু করেছেন, যা শেয়ারবাজারের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনছে।

রোববার (৯ মার্চ) বিএসইসির কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, তিন কমিশনার এবং শেয়ারবাজারের শীর্ষস্থানীয় স্টেকহোল্ডাররা। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই আলোচনা ছিল উত্তপ্ত, তবে আশাব্যঞ্জক। সেখানে বিএসইসির বর্তমান সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এবং ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান জানান, শেয়ারবাজারের স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নে সবাই একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। তারা মনে করেন, শেয়ারবাজার কেবল অর্থনীতির প্রাণ নয়, এটি লাখো বিনিয়োগকারীর স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের ভিত্তি।

ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক দিনের ঘটনাবলীর কারণে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। শেয়ারবাজারের সুনাম ও স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের।” তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কমিশনকে উদ্যোগী হতে হবে এবং সকল অংশীজনের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

আরও পড়ুন:

বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কবার্তা, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক দুটি ঘটনা

বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক, জরুরি পদক্ষেপ নিলেন ডিএসই চেয়ারম্যান

বৈঠকে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আতঙ্ক দূর করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন তাদের কর্মবিরতি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় এবং সবাইকে কাজে ফেরার আহ্বান জানায়।

সম্প্রতি, এক কর্মকর্তার বাধ্যতামূলক অবসরসহ বেশ কিছু প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ফলে সংস্থার ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে কর্মবিরতি এবং অফিসে অনুপস্থিতির মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা শেয়ারবাজারেও বিরূপ প্রভাব ফেলে। তবে, এই সংকট দ্রুত সমাধানের জন্য কমিশন ইতোমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে।

এদিকে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) শেয়ারবাজারে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা রোধে সার্ভিল্যান্স (নজরদারি) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে কেউ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না পারে।

বর্তমানে বিএসইসি, শেয়ারবাজারের অংশীজন এবং ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে এবং শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সকলে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

এই সংকটের সমাধান কেবল একটি প্রতিষ্ঠান বা কয়েকজন ব্যক্তির দায়িত্ব নয়, বরং এটি শেয়ারবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। আর এই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসই শেয়ারবাজারকে আবারও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

কবির/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ