ঢাকা, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

2025/03/08/24updatenews-43.webp

জরিপে এগিয়ে বিএনপি, দেখেনিন এনসিপি ও জামায়াতের অবস্থান

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৮ ২০:৫৪:০৩
জরিপে এগিয়ে বিএনপি, দেখেনিন এনসিপি ও জামায়াতের অবস্থান

জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনই অনুষ্ঠিত হলে বিএনপি সর্বোচ্চ ৪১.৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে—এমন তথ্য উঠে এসেছে ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জরিপে। শনিবার (৮ মার্চ) রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে সহযোগিতা করেছে ব্রেন (BRAIN) এবং মুক্তচিন্তার প্ল্যাটফর্ম ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত দেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলায় ১০,৬৯৬ জনের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়।

জরিপ অনুযায়ী, ভোট হলে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে জামায়াতে ইসলামী, যারা ৩১.৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ, যারা ১৩.৯ শতাংশ সমর্থন পেয়েছে। তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পেয়েছে ৫.১ শতাংশ ভোট।

অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২.৬ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ১ শতাংশ, গণঅধিকার পরিষদ ০.৫ শতাংশ, গণসংগতি আন্দোলন ০.২ শতাংশ এবং অন্যান্য দল মিলিয়ে ৩.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

জরিপে বয়সভিত্তিক সমর্থন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিএনপি সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাচ্ছে জেনারেশন এক্স ও বুমার প্রজন্মের মধ্যে, যেখানে ৪৭% ভোটার তাদের পক্ষে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ৩৫% জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং জেনারেশন জি-এর ৩৪% ভোটার তাদের সমর্থন করছে। সাধারণত রক্ষণশীল দল হিসেবে পরিচিত হলেও জামায়াতের প্রতি তরুণদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জরিপ থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।

বিএনপি গ্রামাঞ্চলে ৪২% এবং শহরে ৪০% ভোটারের সমর্থন পেয়েছে, যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। অন্যদিকে, জামায়াত গ্রামে ৩২% এবং শহরে ৩০% ভোটারের সমর্থন পেয়েছে। এই পার্থক্য দেখায় যে বিএনপির গ্রামীণ ও শহুরে উভয় ধরনের ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তবে জামায়াত মূলত গ্রামাঞ্চলে বেশি শক্তিশালী।

বিএনপি পুরুষ ও নারী ভোটারদের মধ্যে প্রায় সমান সমর্থন পেয়েছে। পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ৪২% এবং নারী ভোটারদের মধ্যে ৪১% তাদের পক্ষে রয়েছেন। তবে, জামায়াতে ইসলামী পুরুষদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়, যেখানে ৩৩% পুরুষ এবং ৩০% নারী তাদের সমর্থন দিয়েছেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৮.১৭% ভোটার ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চান। এদের মধ্যে ৩১.৬% চান জুনের মধ্যে এবং ২৬.৫% চান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হোক। ১০.৯% ভোটার ডিসেম্বরের পর নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন মাত্র ৯.৩% অংশগ্রহণকারী। অন্যদিকে, ৫.৩% অংশগ্রহণকারী সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি ২৯.৪% ভোটার। এদের মধ্যে ৪৯.৩% বলছেন, তারা প্রার্থী সম্পর্কে জানার পর সিদ্ধান্ত নেবেন। ৩৩.৯% ভোটার রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। নারী ভোটারদের মধ্যে এই অনিশ্চয়তার হার ৩৩.৭৭%, যা পুরুষদের তুলনায় বেশি (২৫.৮১%)।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন ইনোভিশন কনসালটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ স্পিকসর প্রধান মো. রুবাইয়াৎ সারওয়ার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনোভিশন কনসালটিং বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী শাহেদ এইচ ফেরদৌস, ইনোভিশনের প্র্যাকটিস এরিয়া লিড আবদুর রব এবং বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর।

এই জরিপের ফলাফল বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি প্রতিচিত্র তুলে ধরছে এবং আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ