ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৬ ১০:১০:৩৯
মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিন ব্যাট-প্যাড তুলে রাখতেই হয়। একদিন স্টাম্পের পেছনে দাঁড়ানো শেষ বলে মনে হয়, ‘এবার থামার সময় হয়েছে।’ মুশফিকুর রহিমের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হলো না। ১৯ বছরের দীর্ঘ পথচলা শেষে অবশেষে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন এই লড়াকু যোদ্ধা। ৫ মার্চ রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন বার্তায় জানিয়ে দিলেন, তিনি আর ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ফিরছেন না।

কিন্তু পরিসংখ্যানের বাইরেও যে মুশফিক আছেন! যিনি ছিলেন দলের নির্ভরতার প্রতীক, বিপদের মুহূর্তের সহায়, গ্লাভস হাতে নির্ভুল এক প্রহরী। ওয়ানডে থেকে তার প্রস্থান মানে শুধু একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি নয়, বরং এক যুগের ইতি টানা। তবে স্মৃতির পাতায় তিনি থাকবেন চিরকাল।

২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের হারারেতে যখন তরুণ মুশফিক প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামেন, তখন কেউ ভাবেনি, এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবেন। অভিষেক ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি, কিন্তু থেমে থাকার মানুষ ছিলেন না মুশফিক। নিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে, মিরপুরের সবুজ গালিচায় ১৮ রানে অপরাজিত থেকে জানান দেন—তিনি এসেছেন থাকতে।

এরপর সময় কেবল বদলেছে, কিন্তু মুশফিক বদলায়নি। কঠিন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরার সেই মনোভাব তিনি ধরে রেখেছেন ক্যারিয়ারের শেষদিন পর্যন্ত।

ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যানগুলো বলছে, তিনি বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটার।

ম্যাচ: ২৭৪

রান: ৭৭৯৫

গড়: ৩৬.৪২

স্ট্রাইক রেট: ৭৯.৭০

সর্বোচ্চ ইনিংস: ১৪৪ (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে)

সেঞ্চুরি: ৯

হাফ সেঞ্চুরি: ৪৯

শূন্য রানে আউট: ১২ বার

বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। পাশাপাশি, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিকও।

মুশফিক মানেই লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে তিনি এমন কিছু করে গেছেন, যা দীর্ঘদিন মনে রাখবে বাংলাদেশ ক্রিকেট। ২০২৩ সালে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৬০ বলে সেঞ্চুরি করে তিনি গড়েছেন বাংলাদেশের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড।

ব্যাটের পাশাপাশি গ্লাভস হাতেও অনন্য ছিলেন মুশফিক। তার নামের পাশে রয়েছে ২৯৯ ডিসমিসাল, যা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫১ ম্যাচে করেছেন সর্বোচ্চ ১৪৩৭ রান, যা অন্য কোনো দলের বিপক্ষে তার সর্বোচ্চ। দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি সফল ইংল্যান্ডের মাটিতে, যেখানে ১৬ ম্যাচে করেছেন ৬৯৪ রান।

কিন্তু শেষটা কি এমন হওয়ার কথা ছিল? ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার পর থেকেই শুরু হয়েছিল গুঞ্জন। ভারতের বিপক্ষে শূন্য, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২ রানে ফিরেছিলেন তিনি। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে আর ফেরার সুযোগ পাননি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই যে খেলে ফেলেছেন নিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচ!

কিন্তু বিদায় মানে কি সত্যিই শেষ? মুশফিক এখনো ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকবেন, হয়তো অন্য ফরম্যাটে, কিংবা একদিন পরামর্শক হিসেবে, কোচ হিসেবে।

ওয়ানডে ক্রিকেটের চিত্রনাট্যে তার ভূমিকা শেষ, কিন্তু স্মৃতির পাতায় তিনি থাকবেন চিরকাল। কখনো ২০১৮ এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক হাতে খেলা ইনিংস হয়ে, কখনো ২০১৯ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করা নির্ভরতার প্রতীক হয়ে।

বিদায় মুশফিক, ওয়ানডে ক্রিকেট তোমায় মনে রাখবে চিরকাল।

জামাল/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে