ঢাকা, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১

ভারতে শেখ হাসিনার গোপন জীবন: সাত মাসের শ্বাসরুদ্ধকর অধ্যায়

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৫ ২১:৫১:৩৩
ভারতে শেখ হাসিনার গোপন জীবন: সাত মাসের শ্বাসরুদ্ধকর অধ্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ঢেউয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতবর্ষের মাটিতে পা রাখেন। সাত মাস কেটে গেছে, কিন্তু তার অবস্থান ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখনো রহস্যময়। দিল্লির বাতাসে গুঞ্জন, আলোচনার টেবিলে প্রশ্ন—ভারত সরকার তার সঙ্গে কী পরিকল্পনা করছে? তিনি কি বাংলাদেশে ফিরে যাবেন, নাকি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবেন?

অদৃশ্য উপস্থিতি, দৃশ্যমান অনুপস্থিতি

ভারতে আসার পর থেকে শেখ হাসিনাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। কোনো ছবি নেই, নেই কোনো ভিডিও—শুধু কিছু পরিকল্পিত অডিও বার্তা। ভারত সরকার তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রেখেছে। এক অদৃশ্য উপস্থিতির মধ্যে কাটছে তার সময়, যেখানে তিনি আছেন, কিন্তু নেই।

তিনি কোথায়? গুঞ্জনের ভেলায় অজানা ঠিকানা

হিন্ডন বিমানবন্দরে নামার পর থেকেই তার অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা। কেউ বলছেন, দিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স এলাকায় এক বাংলোয় তিনি অবস্থান করছেন, আবার কেউ দাবি করছেন, মীরাট ক্যান্টনমেন্টের কোনো সুরক্ষিত ঘেরাটোপে বন্দি তার দিনযাপন। ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, বরং তারা বলছে, শেখ হাসিনার নিরাপত্তাই তাদের প্রথম অগ্রাধিকার।

রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রশ্ন, অনিশ্চয়তার ছায়া

ভারত বহুবার রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিয়েছে, তবে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি "আতিথি", কিন্তু আশ্রয়প্রার্থী নন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সমীকরণ বিবেচনায় নিয়েই ভারত ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

ফেরত চায় বাংলাদেশ, ভারত বলছে ‘সময় লাগবে’

বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু ভারত এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে, বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা এখনো অস্পষ্ট। ফলে, তারা এই অনুরোধের বাস্তবতা ও আইনগত দিক পর্যবেক্ষণ করছে।

পুনরুত্থানের স্বপ্ন, বাস্তবতার বাধা

শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, একদিন তিনি দেশে ফিরবেন এবং আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করবেন। কিন্তু বাস্তবতা কি তার অনুকূলে? ৭৭ বছর বয়সী এই নেত্রীর সামনে আছে সময়ের কঠিন পরীক্ষা। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দলের অভ্যন্তরীণ সংকট তার প্রত্যাবর্তনের পথ কঠিন করে তুলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এক অনিশ্চিত ছায়ার মধ্যে আটকে গেছে।

ভারতের অপেক্ষা, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ

ভারত সরকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। কূটনৈতিক আলোচনায় তার নাম উচ্চারিত হচ্ছে বারবার, কিন্তু সিদ্ধান্তহীনতার মেঘ কাটছে না। ভারত কি তাকে দেশে ফেরানোর সুযোগ দেবে, নাকি নতুন কোনো পথ দেখাবে? সেই উত্তর হয়তো লুকিয়ে আছে আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণে।

সময়ই বলবে, সাত মাসের এই গোপন জীবন কোন নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

জামাল/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে