বিদেশি নাগরিকত্বের খোঁজে সরকারের অভিযান: সাবেক এমপিদের কেলেঙ্কারি ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এক নতুন অভিযানে বেরিয়েছে, যার লক্ষ্য সাবেক সংসদ সদস্যদের বিদেশি নাগরিকত্ব সম্পর্কিত গোপন তথ্য উদ্ঘাটন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার এমপি-মন্ত্রীদের মধ্যে যারা বিদেশি নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্স কার্ড নিয়েছিলেন, তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন এই খোঁজ? কারণ, আইনের সোজা নির্দেশনাই ছিল যে, কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বা সেই রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে, তবে তাকে আর এমপি বা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই আইনকে অবজ্ঞা করে চলে আসছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সরকার দলের কিছু নেতানেত্রী। তারা বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন করে সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন, এমনকি মন্ত্রিত্বও নিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে ২৪ জন সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের নাম চিহ্নিত করেছে, যারা এই আইন ভেঙেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এসব নেতাদের মধ্যে রয়েছে কিছু নাম, যাদের বিদেশি নাগরিকত্ব এবং গ্রিন কার্ডের তথ্য পাওয়া গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ মিশন ও দূতাবাসগুলোর কাছে ১৮৮টি দেশে পাঠানো হয়েছে তদন্তের অনুরোধ। উদ্দেশ্য একটাই – কোন এমপি বা মন্ত্রী বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
এই অনুসন্ধান যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যিনি গোপনে সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বেলজিয়ামের রেসিডেন্স কার্ডধারী, আর সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যুক্তরাজ্যের নাগরিক। সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও জুনাইদ আহমেদ পলকেরও যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড রয়েছে।
এছাড়া, আরো কিছু সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে, যেমন মো. তাজুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং মাহবুব আলী। এসব তথ্য সামনে আসার পর সরকারের মনোযোগ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
তবে, আইন অনুযায়ী, যেহেতু বাংলাদেশের নাগরিকরা বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারেন, তবুও সরকারি চাকরি বা সংসদ সদস্য হতে গেলে তাদের বিদেশি নাগরিকত্ব থাকতে পারে না। তাই, সরকারের প্রথম লক্ষ্য এখন এই বিষয়টি নিশ্চিত করা – যারা বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন করে সংসদে আসেন, তাদের বিরুদ্ধে কী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন করে যারা এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন, তাদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।"
এখন শুধু অপেক্ষা, সরকার কীভাবে এগিয়ে আসে এই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসা কেলেঙ্কারি নিয়ে, এবং এই ঘটনায় কারা কোথায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
রাজিব/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- একাধিক গণমাধ্যমে দাবি ‘নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনার মৃত্যুর’ জানা গেল খবরের সত্যতা
- আবারও বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- আইসিসির ৩৭.৪ ধারা অনুযায়ী আউট হয়েও সেঞ্চুরি করলেন কোহলি
- নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের কিছক্ষণ আগে বাংলাদেশের একাদশ প্রকাশ
- নতুন ঘোষণা দিলেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান
- চরম দু:সংবাদ: ভিসা বন্ধ ঘোষণা
- ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যু, জানা গেল সত্যতা
- পিলখানার হত্যাকাণ্ড কোনো সেনাসদস্য ঘটায়নি সরাসরি যাকে দুষলেন সেনাপ্রধান
- আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে হারানোর পেছনের নায়ক বাংলাদেশের বুলবুল
- নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর সারজিস আলমের ঘোষণা
- নাহিদের পদত্যাগে নতুন বিতর্ক, ভারতীয় সাংবাদিকের পোস্টে তোলপাড়
- বাড়লো আজকের সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- বাংলাদেশের একটি শক্তির কারণে যুদ্ধে জড়াবে না ভারত
- নাহিদ ইসলামের জায়গাতে নতুন উপদেষ্টা হচ্ছেন যিনি
- অবশেষে কমলো সোনার দাম, আজ ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম