ঢাকা, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়: ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মার্চ ০২ ১১:২০:৩২
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়: ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান সময়ে হৃদরোগ, বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক, কেবলমাত্র বয়স্কদের নয়, তরুণদেরও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। বিশ্বব্যাপী হৃদরোগের কারণে প্রতিবছর লাখো মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। এখানে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে ৫টি কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো:

১. প্রক্রিয়াজাত এবং জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন

বর্তমান ব্যস্ত জীবনে প্রক্রিয়াজাত খাবার ও জাঙ্ক ফুড অনেকের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু এগুলোতে থাকা অতিরিক্ত চর্বি, চিনি ও প্রিজারভেটিভ হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব খাবার উচ্চ কোলেস্টেরল এবং প্রদাহের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। স্বাস্থ্যকর হৃদযন্ত্র বজায় রাখতে তাজা ফল, শাক-সবজি, বাদাম এবং গোটা শস্যজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। এসব খাবার দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২. পর্যাপ্ত ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন

স্বাস্থ্যকর জীবনধারার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ঘুমের সময় শরীর তার কোষগুলোর মেরামত করে এবং স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। অপর্যাপ্ত ঘুম উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ায়। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৩. মানসিক চাপ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন

দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত আবেগ হৃদরোগের অন্যতম কারণ হতে পারে। স্ট্রেস শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং রক্তচাপ বাড়ায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম, ধ্যান, যোগব্যায়াম ও সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত থাকার মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো যেতে পারে। পাশাপাশি, প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং ইতিবাচক চিন্তা করা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

৪. ভিটামিন বি১২ এর মাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন

শরীরে ভিটামিন বি১২-এর অভাব হলে এটি হোমোসিস্টিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। হোমোসিস্টিন হলো একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড, যার উচ্চ উপস্থিতি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, দুধ, মাছ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন বি১২ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।

৫. ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খান

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি প্রদাহ কমায়, রক্ত ​​জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ওমেগা-৩ হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। খাদ্যতালিকায় স্যামন, তিসির বীজ, আখরোট এবং চিয়া সিডের মতো খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য সচেতন জীবনধারা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, ভিটামিন বি১২-এর পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করা এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। তাই এখনই সচেতন হোন এবং সুস্থ হৃদযন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করুন।

রফিক/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে