রমজান মাসের শুরুতেই বাজার থেকে উধাও সয়াবিন তেল, তীব্র সংকট

রমজান মাসের শুরুতেই দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। একদিকে রোজার প্রস্তুতির সময়, অন্যদিকে বাজারে তেলের সঙ্কট—এই দুইয়ের সম্মিলনে ক্রেতাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল খুঁজেও পাচ্ছেন না। পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানগুলোও শূন্য। ফলে, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়ে উঠেছে, যা রমজানে বড় সমস্যা হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ভোক্তারা।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, দেশে ভোজ্যতেলের কোনো সংকট নেই। গত বছরের একই সময়ে তুলনায় এই বছর এক লাখ টন বেশি তেল আমদানি হয়েছে এবং পাইপলাইনে রয়েছে আরও ৮ লাখ টনের বেশি তেল। কিন্তু তবুও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল অনুপস্থিত। এই অদ্ভুত পরিস্থিতির পেছনে কিছু সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে, যারা সরকারের দাম বাড়ানোর সুযোগ গ্রহণ করে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন।
ভোজ্যতেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংগঠন "বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন" জানিয়েছে, বর্তমানে তারা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি তেল সরবরাহ করছেন। তবে, কিছু ব্যবসায়ী তাদের অসহযোগিতার কারণে বাজারে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন, এর মধ্যে রমজানে চাহিদা প্রায় ৩ লাখ টন। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৮ টন তেল আমদানি হয়েছে, এবং দেশে উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টন তেল। তা সত্ত্বেও, বাজারে তেলের অভাব কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভাব সৃষ্টি হয়েছে কিছু সিন্ডিকেটের কারণে, যারা দাম বাড়ানোর জন্য সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। তারা সরকারের নির্ধারিত দাম মানছে না এবং বাজারে তেলের সংকট তৈরি করছে।
জিনজিরা কাঁচাবাজারের ক্রেতা মো. নূরে আলম জানিয়েছেন, তিনি পাঁচটি বাজার ঘুরেও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাননি। একাধিক বাজারে একই চিত্র দেখা গেছে, যেখানে ক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে তেল পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি কিছু বাজারে খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও তা অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বিশ্বজিৎ সাহা, সিটি গ্রুপের পরিচালক, জানিয়েছেন যে, তাদের প্রতিষ্ঠান আগের চেয়ে বেশি তেল সরবরাহ করছে। তবে অন্যান্য কোম্পানির অসহযোগিতা এবং সিন্ডিকেটের ভূমিকা বাজারে এই সংকট তৈরি করছে।
এদিকে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান জানিয়েছেন, বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে কিছু ব্যবসায়ী অসহযোগিতা করছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, সরকারের কী পদক্ষেপ থাকবে এই সংকট নিরসনে? যদি এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে রমজানের মতো পবিত্র মাসে জনগণের জন্য একটি বড় খাদ্য সংকট তৈরি হতে পারে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল বিএসইসি
- সিলেটে ক্রিকেট মাঠে শোকের ছায়া: বিসিবি কর্মকর্তার অকাল মৃত্যু
- সোনার বাজার: বাংলাদেশে ১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট সোনা ও রুপার দাম
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- বাঁচাও শেয়ারবাজার’: বিনিয়োগকারীদের গর্জনে কাঁপলো মতিঝিল
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২১ এপ্রিল ২০২৫)
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- সিলেটে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে: উত্তেজনা চলছেই
- শ্রীলঙ্কার ‘না’ বলে দেওয়া, ভারতের সেতু স্বপ্ন স্থগিত
- দুই কোম্পানিতে শেয়ারবাজার ডুবেছে : আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা