ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১

আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে হারানোর পেছনের নায়ক বাংলাদেশের বুলবুল

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৭ ২১:২৯:২৫
আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে হারানোর পেছনের নায়ক বাংলাদেশের বুলবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান, যে দেশের অবকাঠামো প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেখানে ক্রিকেটের উন্নতি সাধন সত্যিই চমকপ্রদ। আফগানিস্তান ক্রিকেটের বর্তমান কাঠামো গড়ে তোলার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও আইসিসির গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তাঁর কৃতিত্বে আফগানিস্তানে তৈরি হয়েছে তিনটি হাই পারফরমেন্স সেন্টার এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের পেশাদার কাঠামো যা বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের।

এমন একটি সময়ে যখন আফগানিস্তান ছিল অস্থির

এমন একটি সময়ে যখন আফগানিস্তানটি রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যুদ্ধের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল, তখন আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তিনি দেশটির ক্রিকেটিং অবকাঠামো গড়ে তুলতে তৎপর হন, যা কেবল ক্রিকেট খেলোয়াড়দের জন্য নয়, সমগ্র জাতির জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্রিকেটের প্রতিটি স্তরে উন্নতি

আফগানিস্তানের ক্রিকেটে এখন সাতটি ওয়ানডে টুর্নামেন্ট হয়, যার মধ্যে ছয়টি সিনিয়র লেভেলের জন্য। এই সংখ্যাটি বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি, যেখানে ঢাকায় মাত্র একটি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ রয়েছে। এছাড়াও আফগানিস্তানে তিনটি হাই পারফরমেন্স সেন্টার রয়েছে—কাবুল, কান্দাহার এবং জালালাবাদে, যা দেশটির ক্রিকেটের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন:

ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩৫০ রান করার সিস্টেম জানে না বাংলাদেশ

বুলবুলের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব হাই পারফরমেন্স সেন্টার চালু হয়েছে। আফগানিস্তানের যে ক্রিকেট কাঠামো, তা এখন আর সীমানা বদ্ধ নয়, বরং এটি দেশের বিভিন্ন প্রদেশে বিস্তৃত। ২০১৩ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তার পরিকল্পনা শুরু করেছিল, আর আজ সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে।

প্লেয়ার সিলেকশন এবং প্রদেশ ভিত্তিক ক্রিকেট

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে, আফগানিস্তানে খেলোয়াড় বাছাইয়ের একটি শক্তিশালী প্রক্রিয়া তৈরি হয়েছে। দেশটির পাঁচটি প্রধান অঞ্চলে ক্রিকেট খেলোয়াড়দের জন্য বিশেষ প্রক্রিয়া রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রাদেশিক লীগ, ইন্টার ক্লাব ক্রিকেট, এবং বিভিন্ন বয়সভিত্তিক লিগ। এসব টুর্নামেন্টের মাধ্যমে প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা নির্বাচন করা হয় এবং এগিয়ে আসেন নতুন ক্রিকেটাররা।

বুলবুলের অবদান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের চিন্তাভাবনা এবং কৌশল না থাকলে আজকের আফগানিস্তান ক্রিকেটের এই সফলতা সম্ভব হত না। আফগানিস্তানের ক্রিকেট কাঠামোর উন্নতি নিশ্চিত করতে, তিনি শুধু খেলোয়াড়দের জন্য নয়, দেশটির ক্রিকেট প্রশাসনের জন্যও অবদান রেখেছেন। তাঁর নেতৃত্বে আফগানিস্তানে তৈরি হয়েছে আধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং উন্নত প্রশিক্ষণ সুবিধা।

আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো: আফগানিস্তানের সঙ্গে তুলনা

বাংলাদেশের তুলনায় আফগানিস্তানের ক্রিকেট কাঠামো অনেক বেশি বিস্তৃত এবং উন্নত। আমাদের দেশে কেবল ঢাকায় সীমাবদ্ধ রয়েছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতাটি, অথচ আফগানিস্তানে প্রদেশভিত্তিক ক্রিকেট লীগগুলো প্রতিযোগিতামূলকভাবে চালু হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্থা, বিসিবি, এখনও আফগানিস্তানের মতো শক্তিশালী হাই পারফরমেন্স সেন্টার তৈরি করতে পারেনি।

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে আফগানিস্তান ক্রিকেটের যে উন্নতি ঘটেছে, তা অন্য দেশগুলোর জন্যও একটি মডেল হতে পারে। বিশেষত বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য আফগানিস্তানের মডেল অনুসরণ করা যেতে পারে।

আফগানিস্তানের ক্রিকেটের অবকাঠামো এবং তার অগ্রগতির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল আমিনুল ইসলাম বুলবুলের। তাঁর পরিকল্পনা এবং কঠোর পরিশ্রম আফগানিস্তানের ক্রিকেটকে বিশ্বের মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আজ আফগানিস্তানের ক্রিকেট যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তার সব কৃতিত্ব বুলবুলের পরিকল্পনা এবং দৃষ্টিভঙ্গির ফল।

মো: রাজিব আলি/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে