ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১

নাহিদের পদত্যাগে নতুন বিতর্ক, ভারতীয় সাংবাদিকের পোস্টে তোলপাড়

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৫ ১৯:১৭:৩৯
নাহিদের পদত্যাগে নতুন বিতর্ক, ভারতীয় সাংবাদিকের পোস্টে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করার পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তুঙ্গে। তবে বিষয়টি আরও বেশি আলোচনায় উঠে আসে ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক অর্ক দেবের একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এই পোস্টে নাহিদের অতীত সংগ্রাম ও বর্তমান সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে গভীর বিশ্লেষণ তুলে ধরেন তিনি।

পোস্টটি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, জন্ম দেয় নতুন বিতর্কের। অনেকেই বলছেন, এটি কেবল নাহিদের পদত্যাগের ঘটনা নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।

অর্ক দেবের পোস্ট: নাহিদের অতীত ও বর্তমান এক ফ্রেমেঅর্ক দেব তার পোস্টে লেখেন—

“নাহিদ ইসলামের সঙ্গে এই ছবিটি তোলা হয় বাংলাদেশ সময় রাত একটা দশটায়। তার আগে দেড় ঘণ্টা আমরা নানা বিষয়ে আলোচনা করেছি। নাহিদ ছিলেন শান্ত, স্থির, যেন কোনো কিছুতেই বিচলিত নন। কিন্তু তার কথাগুলোর ফাঁকে ফাঁকে আমি অনুভব করছিলাম সেই পুরনো ক্ষতগুলোর উপস্থিতি— বাইশে জুলাইয়ের সেই ভয়াবহ রাতের কথা, যেখানে তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল, তারপর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল।”

তিনি আরও লেখেন—

“নাহিদ সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন, কিন্তু তার অনেক বন্ধু হারিয়ে গেছেন চিরতরে। নাহিদ দাঁড়িয়ে থেকেছেন, লড়াই করেছেন, শাসন করেছেন, ভুল করেছেন, তবে কখনো পিছু হটেননি। কিন্তু আজ, তিনি স্বেচ্ছায় ক্ষমতার বলয় ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন— সেই রাস্তা, যেখান থেকে তাকে একদিন চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”

অর্ক দেবের কথায় উঠে আসে এক আবেগঘন স্মৃতি—

“মনে পড়ছে সেই ব্যাডমিন্টন কোর্টে দাঁড়িয়ে নাহিদের স্বগতোক্তি— ‘ভাই, নতুন একটা বাসা খুঁজতে হবে।’ আজ যেন আমরা সবাই সেই বাসা খুঁজছি— এমন একটি জায়গা যেখানে পক্ষ-বিপক্ষ, ক্ষমতাসীন ও প্রান্তিক সবাই ঠাঁই পাবে। যেখানে মানুষ নির্যাতিত হবে না, নিপীড়িত হবে না, যেখানে কোনো রক্তাক্ত ইতিহাস আর নতুন করে লেখা হবে না।”

অর্ক দেবের এই আবেগী ও তীক্ষ্ণ পোস্ট দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। নাহিদের পদত্যাগ নিয়ে যেখানে নানা গুঞ্জন ও অনুমানের ডালপালা ছড়াচ্ছিল, সেখানে এই পোস্ট এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নাহিদের এই সিদ্ধান্ত নিছক ব্যক্তিগত পদত্যাগ নয়, বরং এটি বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে। কেউ বলছেন, এটি ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে দূরে সরে দাঁড়ানোর এক কৌশল, আবার কেউ মনে করছেন, এটি তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্নির্ধারণের প্রথম পদক্ষেপ।

নাহিদ ইসলাম এখনও তার পদত্যাগের কারণ বিস্তারিতভাবে জানাননি। তবে তার অতীত সংগ্রাম, নিপীড়নের শিকার হওয়া, ক্ষমতায় এসে পরিবর্তনের চেষ্টা এবং এখন আকস্মিকভাবে পদত্যাগ— সব মিলিয়ে এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত করছে।

তিনি কি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক জীবন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন, নাকি অন্য কোনো নতুন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন? তার পদত্যাগ কি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের সূচনা, নাকি এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ই দেবে, তবে এক বিষয় নিশ্চিত— নাহিদের পদত্যাগ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোড়নের জন্ম দিয়েছে, যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে অনুভূত হতে পারে।

কবির/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে