ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

ঘরের শত্রু বিভীষণ: ইংল্যান্ডের হয়ে খেলে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়াকের হারালো জশ ইংলিস

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ ১৩:৩৫:১৫
ঘরের শত্রু বিভীষণ: ইংল্যান্ডের হয়ে খেলে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়াকের হারালো জশ ইংলিস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা বাগধারা "ঘরের শত্রু বিভীষণ" যেমন এক অনবদ্য উপমা, তেমনি অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার-ব্যাটার জশ ইংলিসের ক্যারিয়ারের সাথে এই বাগধারা দারুণভাবে মিলে যায়। ইংল্যান্ডের লিডসে জন্ম নেওয়া ইংলিস, নিজের জন্মভূমির বিপক্ষে গতকাল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ক্রিকেটের এক অসাধারণ অধ্যায় রচনা করেন। তার বিস্ফোরক ইনিংসে ভর করে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে নতুন এক মাইলফলক ছোঁয়।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই অস্ট্রেলিয়া দলে ছড়িয়ে পড়ে চোটের দাপট। একে একে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা আঘাত পেয়ে ছিটকে যান—প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজলউড, মিচেল মার্শ এবং মার্কাস স্টয়নিস। শ্রীলঙ্কার কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার সমালোচনা চলছিল, আর কেউ ভাবতেই পারেনি যে তারা আবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ফিরবে। তবে, অস্ট্রেলিয়া যে কখনও হার মানে না, তার প্রমাণ মিলল ইংলিসের হাত ধরে।

শনিবার গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৩৫১ রান তুলেছিল। এতে অস্ট্রেলিয়ার জন্য সামনে দাঁড়িয়ে ছিল এক পাহাড়সম লক্ষ্য। ইংল্যান্ডের জন্য বেন ডাকেটের ১৪৩ বলে ১৬৫ রানের ইনিংস ছিল এক দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনী। কিন্তু সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া রচনা করল নতুন ইতিহাস। ইংলিসের ঝলমলে ইনিংসে মাত্র ৪৭.৩ ওভারে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তারা। ৮৬ বলে ৮টি চার ও ৬টি ছয়ে ইংলিস তুলে নেন ১২০ রান, যা অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছিল অনবদ্য এক জয়।

ইংলিসের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরুর গল্পও বেশ রোমাঞ্চকর। ১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ডের লিডসে জন্ম নেওয়া এই উইকেটকিপার-ব্যাটার, নিজের প্রথম ১৪ বছর কাটিয়েছিলেন ওই শহরেই। ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়েছিল ইয়োর্কশায়ার একাডেমিতে। ১৫ বছর বয়সে তিনি পরিবারের সাথে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসেন এবং সেখানে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ও পার্থ স্কচার্সের হয়ে শুরু করেন তার ক্যারিয়ার। ২০২০-২১ শেফিল্ড শিল্ড মৌসুমে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে তার খেলোয়াড়ি জীবনে।

অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের হয়ে জায়গা পাওয়ার জন্য ইংলিসের ছিল এক দীর্ঘ সংগ্রাম। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি ইংল্যান্ডের সমর্থক, তবে বর্তমানে তার চিন্তা ভিন্ন। ম্যাচ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ইংলিস বলেন, "তিনটা বছর আগের কথা, এখনো ইংল্যান্ডের সমর্থক হিসেবে খুঁজে পেতে পারেন। তবে ফুটবলে আমার সমর্থন এখনও ম্যানচেস্টার সিটিকে। ইংল্যান্ড থেকে বেশ কিছু বার্তা পেয়েছি, যা ভালো লাগছে।"

এই জয়ের সাথে অস্ট্রেলিয়া আবারও তাদের চ্যাম্পিয়ন সত্ত্বা প্রমাণ করেছে। ইংলিসের অবিশ্বাস্য ইনিংস তাদের অদম্য মনোবল এবং কঠিন পরিস্থিতি থেকেও ফিরে আসার ক্ষমতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

রাসেল/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ