ঢাকা, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

১০ সেকেন্ডেই আসক্তি: সিগারেটের ভয়ংকর বাস্তবতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২২ ১৯:৩৭:৪৭
১০ সেকেন্ডেই আসক্তি: সিগারেটের ভয়ংকর বাস্তবতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আপনি যদি ভাবেন, সিগারেটের ক্ষতি ধীরে ধীরে হয়, তাহলে ভুল ভাবছেন। মাত্র ১০ সেকেন্ড—এই সামান্য সময়েই সিগারেট মস্তিষ্কে এমন এক প্রভাব ফেলে, যা আপনাকে আসক্ত করে তুলতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি অ্যানিমেশন ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে নিকোটিন চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই মস্তিষ্কে প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

একটি টান, একটি বদলে যাওয়া মুহূর্ত

সিগারেটের প্রথম ধোঁয়াটিই নির্দোষ মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে তা নয়। গবেষণা বলছে, সিগারেটের নিকোটিন শরীরে ঢুকেই রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে মাত্র ১০ সেকেন্ডে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। তখনই শুরু হয় এক অদ্ভুত খেলা—নিকোটিন মস্তিষ্কের আনন্দ কেন্দ্রকে উত্তেজিত করে সাময়িক সুখের অনুভূতি তৈরি করে। কিন্তু এই সুখ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না।

মস্তিষ্ক এই নতুন "ভালো লাগা" অনুভূতিকে স্বাভাবিক ধরে নেয় এবং আরও নিকোটিন চায়। এভাবেই জন্ম নেয় আসক্তি, যা প্রথমে নির্দোষ মনে হলেও একসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

আসক্তির চক্র: মুক্তি পাওয়া কেন কঠিন?

ধূমপান কেবল একটি শারীরিক অভ্যাস নয়, এটি একটি মানসিক জালে ফেলে দেয়। একবার যদি মস্তিষ্ক নিকোটিনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তবে ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করলেও শরীর ও মন তার বিরোধিতা করতে শুরু করে। ধূমপায়ী ব্যক্তিরা প্রায়ই বলেন, "একটা সিগারেট না খেলে মাথা কাজ করে না"—এটি নিছক বাহানা নয়, এটি মস্তিষ্কের তৈরি করা এক বাস্তবতা।

নিকোটিনের চাহিদা পূরণ না হলে দেহ ক্লান্ত, উত্তেজিত বা হতাশ বোধ করতে পারে। তাই অনেকেই সিগারেট ছাড়তে চাইলেও বারবার ফিরে যান পুরোনো অভ্যাসে। এভাবেই তৈরি হয় এক অনিয়ন্ত্রিত চক্র, যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ নয়।

সিগারেটের দীর্ঘমেয়াদী ছায়া

শুধু আসক্তিই নয়, ধূমপানের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ভয়াবহ।

প্রথমে এটি ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, শ্বাসকষ্টের কারণ হয়।

হৃদপিণ্ডে সরাসরি চাপ তৈরি করে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

ধীরে ধীরে মস্তিষ্কেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে—স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মনোযোগের ঘাটতি তৈরি হয়, এমনকি তরুণ বয়সেই ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো, দীর্ঘদিন ধূমপানের ফলে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

ভালো খবর: মুক্তির পথ এখনো খোলা

এই অন্ধকারের মধ্যে একটি আশার আলো রয়েছে—সিগারেট ছাড়লে শরীর পুনরুদ্ধার হতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিগারেট ছাড়ার পাঁচ বছরের মধ্যে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ধীরে ধীরে হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসও তাদের স্বাভাবিক কার্যকারিতায় ফিরে আসে।

সিগারেট ছাড়ার প্রথম ধাপ হলো সচেতনতা এবং ইচ্ছাশক্তি। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য এবং ভবিষ্যতের জন্য এখনই ধূমপান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিন। কারণ মাত্র ১০ সেকেন্ডের একটি সিদ্ধান্তই আপনার পুরো জীবনকে ধোঁয়ায় ঢেকে দিতে পারে—বা আপনাকে মুক্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে। পছন্দ আপনার!

সোহেল/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে